নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিনটি ‘দেশনায়ক দিবস’ হিসেবে আগেই ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্বঘোষিত সূচি অনুযায়ী শনিবার দুপুর সওয়া ১২টায় বেজে ওঠে সাইরেন। তার ঠিক পরেই শাঁখ বাজান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই শ্যামবাজার থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শেষ হয় রেড রোডে। সকালে তিনি গিয়েছিলেন নেতাজি ভবনে। আর মিছিল শেষে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধনা করেন। বিধানসভা নির্বাচনের আগে যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
এই মিছিলে হয়েছিল জনজোয়ার। মিছিল শেষে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেন, ‘আমাকে পছন্দ নাই করুন, আমার সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে পারতেন। স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ, নেতাজিকে ছাড়া বাংলা হয় না। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে জানতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার আজ পর্যন্তও ছুটির দিন ঘোষণা করেনি। দুঃখ আছে আমাদের। করতেই হবে। নেতাজির লড়াই দেশকে মুক্ত করার জন্য ছিল। আমি এখনও মনে করি নেতাজি ইতিহাস, বিস্ময়।’
মমতার পদযাত্রার কিছুক্ষণ পরেই শহরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনিও নেতাজি ভবনে যাবেন বলে খবর। তার আগেই তাঁর কাছে বার্তা পৌঁছে দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘ভারতের প্ল্যানিং কমিশন তুলে দেওয়া হল। নীতি আয়োগ তৈরি হল। কেন্দ্র রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে না। ন্যাশনাল প্ল্যানিং কমিশন ফিরিয়ে দিতে হবে। আমি রাজীব গান্ধীকে দিয়ে এয়ারপোর্টে নাম করিয়েছিলাম নেতাজির নামে। ভারতের রাজধানী কলকাতা হতেই হবে। বাংলা মাথা নীচু করতে পারে না। নেতাজির বই বাধ্যতামূলক করা উচিত স্কুল–কলেজে। তরুণের স্বপ্নকে সিলেবাসে রাখা হোক। ভারতের চারটে জায়গায় রাজধানী করা উচিত। উত্তর–দক্ষিণ–পূর্ব–পশ্চিমে একটা করে রাজধানী হোক।’
ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এবং ন্যাশানাল লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠান রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। তার আগে নাম না করে নেতাজিকে নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, নেতাজিকে নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। নেতাজির আদর্শ বিসর্জন দিয়ে দিচ্ছে। বন্দরের নাম ছিল সুভাষ বন্দর, তাও উঠিয়ে দেওয়া হল। পরাক্রম দিবস মানে বুঝি না। আমি দেশনায়ক বুঝি। আমরা কেন দেশনায়ক দিবস ঘোষণা করছি জানেন? কারণ রবীন্দ্রনাথ তাঁকে এই নামে সম্বোধন করেছিলেন। নেতাজিকে নিয়ে কারও দয়া–দাক্ষিণ্যের প্রয়োজন নেই।
শনিবার সকালে নেতাজিকে নিয়ে একের পর এক টুইট করেন মমতা। প্রথমটিতে লেখেন, দেশনায়ক সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মদিনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। উনি ছিলেন প্রকৃত নেতা। মানুষের ঐক্যে বিশ্বাসী ছিলেন। আমরা আজকের দিনটা ‘দেশনায়ক দিবস’ হিসাবে পালন করছি। এরপর মিছিল শেষে সভা করেও দেশনায়কের পক্ষে সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী।