মঙ্গলবার বিধানসভার বাজেট অধিবেশন চলাকালীন রাজ্যপালের বক্তব্যের জবাবি ভাষণ দিতে গিয়ে ফের একবার 'কেন্দ্রীয় বঞ্চনা'র বিরুদ্ধে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। ফের একবার অভিযোগ করেন, তাঁর সরকার নানা উপায়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে চলেছে। কিন্তু, বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষ নানা অছিলায় একের পর এক মামলা করে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের কাজের সেই সুযোগ কেড়ে নিচ্ছে।
এই প্রসঙ্গেই আবারও একবার কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার তালিকা এবং রাজ্যে আসন্ন শিল্প বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনার আখ্যান শোনান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকার আবাসের টাকা দেয় না, রাস্তার টাকা দেয় না, ১০০ দিনের শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরিও দিচ্ছে না। তা সত্ত্বেও আমরা রাজ্য়ের টাকায় নানা প্রকল্প ও প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ২ কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি।'
এরই প্রেক্ষিতে বিরোধীদের উদ্দেশে মমতার অভিযোগ, 'আমি কাজ সৃষ্টি করছি। আর ওরা আদালতে গিয়ে মামলা করে একের পর এক সরকারি চাকরি আটকে দিচ্ছে। এমনকী ওবিসি-দের অধিকার নিয়ে মামলা করেও সরকারি নিয়োগের অনেকগুলি জায়গা থমকে দিয়েছে।'
এছাড়াও, ওই দিন বিধানসভায় থাকাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে একের পর এক শিল্প প্রস্তাব আসছে। এবারের বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের নানা তথ্য এই প্রসঙ্গে উত্থাপন করেন তিনি।
এই প্রসঙ্গেই মমতা জানান, প্রখ্যাত চিকিৎসক দেবী শেঠির সংস্থা রাজ্যে নতুন হাসপাতাল তৈরি করবে। তার জন্য রাজ্যের পক্ষ থেকে তাদের ৭ একর জমি দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই সেই কাজ শুরু হবে বলে জানান মমতা। হাসপাতালে ১,৩০০ শয্যার একটি অন্তর্বিভাগ থাকবে। সেই প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়া উপলক্ষে ২০ ফেব্রুয়ারি মমতা একটি অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন।
তাঁর দাবি, বিরোধীরা যতই কুৎসা ও অপ্রচার করুক না কেন শুধুমাত্র বীরভূমের দেউচা পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্প থেকেই অন্তত ১ লক্ষ ছেলেমেয়ের কর্মসংস্থান হবে।
এছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রী 'শিল্পান্ন' নামক একটি নতুন বিপণন কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, আগামী দিনে কলকাতার আলিপুর মিউজিয়ামের ঠিক উলটো দিকে এই বিপণন কেন্দ্র থেকে শিল্পজাত বিভিন্ন সামগ্রী কেনাবেচা করা হবে।
এছাড়াও, এবারের রাজ্য বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ বা মহার্ঘ্য ভাতা যে আরও ৪ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে, সেই সিদ্ধান্তের উল্লেখ করে এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা তুলে ধরার চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন - তাঁর সরকারই ষষ্ঠ পে কমিশন চালু করেছে। মমতা আরও জানান, ২০২৫-২৬ আর্থিক বছরে শুধুমাত্র ডিএ দিতেই খরচ বেড়ে হবে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা।