একুশের নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির সব পথ রুখে দিয়েছে। এই অভূতপূর্ব সাফল্যের পরই তৃণমূল কংগ্রেসে প্রত্যাবর্তন করতে চেয়ে ইমেল–চিঠি–টুইট সবই করেছেন কোনও না কোনও নেতা–নেত্রীরা। একের পর দলত্যাগী নেতারা ফেরার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। সাংসদ, বিধায়ক, জেলা সভাপতি বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দলবদল করেছিলেন। ২০২০ ডিসেম্বর মাস থেকে দলবদলু নেতাদের কথা শুনে মনে হতে শুরু করছিল, নির্বাচনের পর তৃণমূল কংগ্রেস দলটাই উঠে যাবে। কিন্তু একুশের নির্বাচনের পর যেন শুরু হয়েছে উল্টো স্রোত। পুনরায় দলে ফিরে আসতে চাইছেন দলত্যাগী নেতারা। তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মেগা বৈঠকে আজ সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপতত দলবদলুদের নেওয়া হবে না।
সূত্রের খবর, সোনালি গুহ, সরলা মুর্মু, দীপেন্দু বিশ্বাসরা নির্বাচনের মুখে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন। সেই তাঁরাই আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। আপাতত ৬ মাস কতজন ফিরতে চাইছেন তার তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। তারপর কেন ফিরতে চাইছেন তাঁরা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। বিজেপিতে কোন পদে ছিলেন, সাফল্য–ব্যর্থতার খতিয়ান কী, নির্বাচনে জয় না পরাজয় কোনটি হয়েছিল এবং কোনও দুর্নীতি আছে কিনা সেগুলি দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী ক্ষেত্রে সেই খতিয়ান দেখে দলবদলুদের নেওয়া এবং পরে পদ দেওয়ার কথা ভাবা হবে।
এই বিষয়ে সাংবাদিক বৈঠকে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘দলে যাঁরা ফিরতে চাইছেন, সে ব্যাপারে তৃণমূলনেত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’ যদিও একুশের নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের পর কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠকে দলবদলুদের দলে ফেরার বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘আসুক না। কে বারণ করেছে? এলে স্বাগত!’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল কংগ্রেসের এক জেলার শীর্ষ নেতা বলেন, ‘যারা দলে ফিরে আসতে চান তাঁদের জন্য দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়নি। এখন একটু অপেক্ষা তো করতেই হবে। তবে অপেক্ষার ফল ভালই হয়।’