এবার কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকার যাতে অবিলম্বে নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহার করে, সেই দাবিও জানালেন তিনি। কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলনে নামতে চলেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। শুক্রবার দলের বৈঠকে আন্দোলনের কর্মসূচি স্থির হবে। তার আগে বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানান, ‘আমি কৃষকদের জীবন–জীবিকা নিয়ে উদ্বিগ্ন। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত অবিলম্বে কৃষক বিরোধী বিল বাতিল করা। তারা যদি দ্রুত এটা প্রত্যাহার না করে, তাহলে রাজ্য এবং দেশজুড়ে পথে নামবে তৃণমূল। প্রথম থেকেই আমরা এই কৃষকবিরোধী বিলগুলির তীব্র বিরোধিতা করে আসছি।’
তৃণমূল সুপ্রিমো দেশজুড়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দেওয়ায় তোলাপাড় হয়ে গিয়েছে জাতীয় রাজনীতি। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন বাতিলের দাবিতেও সরব হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, আমরা আগামী শুক্রবার (৪ ডিসেম্বর) দলের একটা সভা ডেকেছি। কীভাবে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সাধারণ মানুষের উপর প্রভাব ফেলছে, তার ফলে কীভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, তা নিয়ে আলোচনা করব। কেন্দ্রীয় সরকারকে এই জনবিরোধী আইন প্রত্যাহার করতে হবে।
তিনি তোপ দেগে বলেন, ‘ভারত সরকার সবকিছু বেচে দিচ্ছে। কিন্তু তাই বলে তুমি রেল, এয়ার ইন্ডিয়া, কয়লা, বিএসএনএল, ভেল, ব্যাঙ্ক, প্রতিরক্ষা প্রভৃতি বেচতে পার না। জাতীয় স্বার্থ বিরোধী এই বেসরকারি নীতি প্রত্যাহার করতে হবে। দেশের সম্পদকে আমরা বিজেপি দলের ব্যক্তিগত সম্পত্তি হতে দিতে পারি না।’ উল্লেখ্য, কেন্দ্রের কৃষি আইনের বিরোধিতায় পথে নেমেছেন ৬ রাজ্যের কৃষকরা। অবিলম্বে নয়া কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আইন প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন আন্দোলনরত কৃষকরা। সেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারিতে কৃষক আন্দোলন আরও জোরদার হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এই হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে বিজেপি’র সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘সিপিএম ৩৪ বছর বাংলায় থেকে কেন্দ্র বিরোধী নীতি নিয়ে চলেছিল। মুখ্যমন্ত্রীও তাই করছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পেরও বিরোধিতা করছেন তিনি।’ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সব বিষয়েই দেরিতে ঘুম ভাঙে। আন্দোলন ইতিমধ্যেই দিল্লির দরজায় কড়া নাড়ছে। এখন তিনি বলছেন আন্দোলন করবেন।’ তবে কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থন করে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নীতির জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী স্বাধীনভাবে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতেই পারেন। শুধু খেয়াল রাখতে হবে রাজ্যের জিনিসের যেন দাম নিয়ন্ত্রণে থাকে।’