'ম্যাডাম আপনার সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়াতে চাই না' - ধর্মতলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথোপকথনের সময় এমনই বললেন জুনিয়র ডাক্তার পরিচয় পণ্ডা। শনিবার ধর্মতলায় জুনিয়র ডাক্তারদের মঞ্চে এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কথা বলিয়ে দেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্ত এবং স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী। ফোনে কথোপকথনের সময় নিজেদের ১০টি দাবির কথা জানাচ্ছিলেন পরিচয়। সেইসময় ওই মন্তব্য করেন অনশনরত জুনিয়র ডাক্তার। যিনি গত ১১ অক্টোবর থেকে অনশন শুরু করেছেন। তারইমধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের অনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে যে আপাতত সরানো হচ্ছে না, তা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বাকি ন'টি দাবি অবশ্য তিনি মেনে নিয়েছেন।
মমতা কী কী বার্তা দিলেন?
— আমি আন্দোলনকারীদের সময় দিয়েছি। তোমাদের সঙ্গে দেখা করেছি। তোমাদের জন্য বসে থেকেছি। তোমাদের দাবি মতো কলকাতার পুলিশ কমিশনার-সহ কয়েকজন সরিয়ে দিয়েছি।
— সাধ্যমতো যতটা পারব, ততটা সহযোগিতা করব জুনিয়র ডাক্তারদের।
— একটা হাসপাতাল, একটা দফতর থেকে যদি সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে কীভাবে হবে?
— এখন কালীপুজো, দীপাবলি, জগদ্ধাত্রী পুজো আছে। আমায় তিন-চার মাস দিন। আমি ছাত্র সংসদের নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া তৈরি করে দেখে নেব। আপনাদের তো পরীক্ষাও আছে। পুরো প্রক্রিয়াটা ঠিক করতে হবে তো। আমি তো ছয় মাসও চাইতে পারতাম।
— আপনাদের দিদি হয়ে বলছি। আপনাদের সঙ্গে আমার কোনও মতের বিরোধ নেই। নায্য দাবিকে আমি কোনও অনায্য করি না।
— সরকারি হাসপাতালে পরিষেবা না পেলে মানুষ কোথায় যাবেন? মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
— সোমবার বিকেল ৫ টয় নবান্নে সময় দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন যে ১০ জনের বেশি প্রতিনিধি যেন না আনা হয়।
— ডাক্তারি পরীক্ষায় যাতে কেউ ঘাড় ঘোরাতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করা হবে।
জুনিয়র ডাক্তাররা কী কী দাবি করেছেন?
১) আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকদের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় দ্রুত ও স্বচ্ছ বিচার।
২) ২) স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমের দাবি।
৩) রাজ্যের প্রতিটি হাসপাতালে কেন্দ্রীয় রেফারেল ব্যবস্থা।
৪) ফাঁকা বেডের জন্য ডিজিটালি আপডেট ব্যবস্থা।
৫) টাস্ক ফোর্স গঠন, সিসিটিভি লাগানো, প্যানিক বাটন থাকা এবং প্রয়োজনে হেল্পলাইন নম্বর।
৬) কোনও হাসপাতালের নিরাপত্তায় সিভিক ভলান্টিয়ার রাখা যাবে না।
৭) হাসপাতালের প্রতিটি শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে।
৮) থ্রেট কালচারে জড়িত লোকেদের শাস্তি।
৯) ছাত্র সংসদ নির্বাচন।
১০) রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং হেলফত রিক্রুটমেন্ট বোর্ডে দুর্নীতির তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে।