আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরেও ২০১০ সালের পরে জারি ওবিসি শংসাপত্র অনুসারে নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছিল রাজ্যে। বুধবার আদালতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দিতে বিচারপতিদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। আর মুখ্যসচিব আদালতে একথা স্বীকার করতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ‘নির্লজ্জ মুসলিম তোষণ’এর অভিযোগ তুলে সরব হলেন বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক শংকর ঘোষ। হিন্দুস্তান টাইমসকে তিনি জানিয়েছেন, এতেই স্পষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিম তোষণে কতটা বেপরোয়া।
আরও পড়ুন - মুসলিম তোষণ করতে হাইকোর্টেরও পরোয়া করেন না মমতা: শংকর ঘোষ
পড়তে থাকুন - শুভেন্দু কি এবার ভবানীপুরে দাঁড়াবেন? কী বলছেন সুকান্ত! 'মমতাকে হারাব'
বুধবার আদালতে মুখ্যসচিবের ক্ষমাপ্রার্থনার পর শংকরবাবু বলেন, ‘ক্ষমতায় এসে তোষণ করতে আইনের পরোয়া না করে মুসলিমদের নাম ওবিসি তালিকায় তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন সভায় সেকথা বুক বাজিয়ে বলেও বেড়িয়েছেন তিনি। আদালত গোটা প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তার পরেও মুসলিম তোষণে নিরস্ত হননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ও তাঁর সরকার এতটাই বেপরোয়া যে আদালতের রায়কে অগ্রাহ্য করে গোপনে সরকারি চাকরিতে মুসলিমদের নিয়োগের পরিকল্পনা করছিলেন। আর মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে সেই বেআইনি কাজে সামিল হয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। এখন আদালতে ভুল হয়ে গেছে বলে ক্ষমা চাওয়ার নাটক করছেন তিনি। এতেই স্পষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুসলিম তোষণে আদালতেরও পরোয়া করেন না।’
গত বছর ২২ মে রাজ্যে ২০১০ সালের পর জারি প্রায় ৫ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। রায়ে আদালত জানায়, রাজ্যের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশন আইনকে পাশ কাটিয়ে ২০১০ সালের পর থেকে ৬৬টি সম্প্রদায়কে ওবিসি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করেছে রাজ্য সরকার। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ। ইচ্ছা করলে রাজ্য সরকার কোনও সম্প্রদায়কে ওবিসি শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করতেই পারে। কিন্তু সেজন্য ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস কমিশনের মাধ্যমে সামাজিক সমীক্ষা করে তার পর আইন মেনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবে এই রায়ের প্রভাব ইতিমধ্যে ওবিসি সার্টিফিকেট ব্যবহার করে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের ওপর পড়বে না বলে জানান বিচারপতিরা।
আরও পড়ুন - ‘বাবা-মা বাংলাদেশি হলেও আমি ভারতীয়!’ দাবি তৃণমূলের ‘আগুনে’ যুবনেতার
সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্টের রায়ে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। এরই মধ্যে কোঅপারেটিভ সোসাইটিতে বাতিল ওবিসি সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হয়। এর পরই কলকাতা হাইকোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় বুধবার মুখ্যসচিবকে হাজিরা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ।