বারাণসীর ধাঁচে ইতিমধ্যেই বাংলায় শুরু হয়েছে গঙ্গা আরতি। তা দেখতে দিব্যি মানুষ ভিড় করছেন গঙ্গার গাটে। এবার কলকাতায় কাশীর আদলেই আয়োজিত হতে চলেছে দেব দীপাবলি উৎসব। কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে আগামী ২৬ এবং ২৭ নভেম্বর বাজে কদমতলা ঘাটে সরকারি উদ্যোগে পালিত হবে দেব দীপাবলি। এটা রাজ্যে প্রথম হতে চলেছে বলে খবর। এই উৎসবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। তাঁর আমন্ত্রণপত্র নবান্নে পাঠানো হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশের পর দেব দীপাবলি উৎসবের সূচনা করবেন স্বয়ং মেয়র বলে জানানো হয়েছে। যে বাজে কদমতলা ঘাটে এই উৎসব হবে সেখানে প্রত্যেকদিন গঙ্গা আরতি করা হয়। ২০২৩ সালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই গঙ্গা আরতির সূচনা করেন। সেটা এখন শহরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবার শুরু হবে দেব দীপাবলি উৎসব। তাই কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে এই উৎসবের উদ্বোধন করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। যদিও তিনি যোগদান না করতে পারছেন না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই উৎসবের উদ্বোধন করবেন মেয়র বলে জানিয়েছেন মেয়র পারিষদ তারক সিং।
অন্যদিকে কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকে বাজে কদমতলা ঘাটে গঙ্গা আরতি আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়, দেবোত্তর জয়চণ্ডী ঠাকুরানি ট্রাস্টকে। আর তাদেরকেই এই উৎসব আয়োজনের দায়িত্বে দেওয়া হল। এখন দেব দীপাবলি আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করেছে ট্রাস্ট। সহায়তা করছে কলকাতা পুরসভা। উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি দেখে এসেছেন মেয়র পারিষদ তারক সিং। এখানে ১০ হাজার প্রদীপে সাজানো হবে গঙ্গার ঘাট। সমস্ত কাজ যাতে সুসম্পন্ন হয় তার জন্য সজাগ দৃষ্টি রাখছে কলকাতা পুরসভা। কলকাতা পুলিশও সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। দেব দীপাবলি উৎসব কার্তিক পূর্ণিমায় দেখার মতো হয়ে ওঠে বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বর এবং গঙ্গার ঘাট। কয়েক লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে হয় দেব দীপাবলি উৎসব। সেই আদলেই কলকাতা পুরসভা শহরে দেব দীপাবলির আয়োজন করছে।
আরও পড়ুন: ‘মেরে হাড়গোড় ভেঙে দেবো’, পুকুর ভরাট রুখতে গিয়ে মেজাজ হারালেন তৃণমূল বিধায়ক
কথিত আছে, এই পূর্ণিমার আগের একাদশী তিথিতে স্বয়ং বিষ্ণু নিজের নিদ্রাভঙ্গ করেন। তাই এই পূর্ণিমা তিথিতে দেবলোকে দেব দীপাবলি উৎসব পালিত হয়। অনেকে এই তিথিকে বৈকুণ্ঠ চতুর্দশী হিসাবেও পালন করে। এছাড়া আর একটি কথাও বলা হয়। সেটি হল— এই তিথিতে মহাদেব অর্ধনারীশ্বর রূপে বধ করেছিলেন ত্রিপুরাসুরকে। তাই এই পূর্ণিমা অত্যন্ত পবিত্র। গোটা উত্তর ভারত জুড়ে দেব দীপাবলি উৎসব পালিত হয়। বাংলায় আবার এই দিনটিকে রাস উৎসব হিসাবেও পালন করা হয়। নবদ্বীপ, শান্তিপুর, দাঁইহাটে পালিত হয় এই রাস উৎসব। তবে দেব দীপাবলির আয়োজন কলকাতায় এই প্রথমবার।