আবারও কলকাতায় মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা। যার জেরে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে অফিস ফেরতের সময়ে প্রায় ঘণ্টা খানেকের জন্য বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল কলকাতা মেট্রো রেলের ব্লু লাইনের (শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণের মধ্যে - দক্ষিণেশ্বর থেকে কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত) পরিষেবা। যদিও ঘণ্টা খানেক পর থেকে ধীরে ধীরে পরিষেবার ফের স্বাভাবিক হয় বলে জানা গিয়েছে।
কলকাতা মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) সন্ধ্যায় এসপ্ল্যানেড স্টেশনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন এক ব্যক্তি। এদিন সন্ধে ৭টা বেজে ৫৬ মিনিট নাগাদ ওই ব্যক্তি লাইনে ঝাঁপ দেন। তাঁকে উদ্ধার করতে সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয় মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। থার্ড লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে তাঁকে লাইন থেকে তুলে আনার ব্যবস্থা করা হয়।
এর ফলে একদিকে শহরের দক্ষিণ প্রান্তে ময়দান থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত এবং অন্যদিকে শহরের উত্তর প্রান্তে সেন্ট্রাল থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালানো হয়। মাঝের অংশে - অর্থাৎ - ময়দান থেকে সেন্ট্রাল পর্যন্ত পরিষেবা বন্ধ রাখতে হয়। এর ফলে বেজায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। বিশেষ করে বিভিন্ন স্টেশনে অফিস ফেরত জনতার ভিড় জমতে শুরু করে। অনেকেই মেট্রো ছেড়ে সড়ক পথে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। যার জেরে হঠাৎ করে মেট্রোর রুট বরাবর বাসগুলিতেও যাত্রীবোঝাই হয়ে যায়।
মেট্রো রেলওয়ের তরফে আরও জানা গিয়েছে, এদিনের এই ঘটনার পর রাত প্রায় ৯টা নাগাদ পরিষেবা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তবে, এই ঘটনায় ফের একবার মেট্রো রেলে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল।
মাঝখানে বেশ কিছুটা সময় বিরতির পর ইদানীংকালে আবারও মেট্রোয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার বা আত্মহত্যার চেষ্টা করার মতো ঘটনার প্রবণতা বেড়েছে। যা নিয়ে প্রবল উদ্বিগ্ন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
এই ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা আটকানোর জন্যই সম্প্রতি কালীঘাট মেট্রো স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে নির্দিষ্ট দূরত্বে গার্ডরেল লাগানো হয়। কিন্তু, তাতে হিতে বিপরীত হয়। ট্রেনে ওঠা-নামা করতে গিয়ে প্রবল সমস্যায় পড়েন যাত্রীরা। ফলত, গার্ডরেল দেওয়ার পরিকল্পনা ত্যাগ করতে হয় মেট্রো কর্তৃপক্ষকে।
এরই মধ্যে গত মাসে কবি নজরুল স্টেশনে মেট্রোর লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন এক ব্যক্তি। তাঁকে উদ্ধার করে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও প্রাণে বাঁচানো যায়নি। এর আগেও বহুবার একই ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি এমনই যে সর্বক্ষণ প্ল্যাটফর্মে রেলপুলিশকে পাহারায় রেখেও বিশেষ লাভ হচ্ছে না।