দু’মাসে তিন বার অলৌকিক জীবদান পেলেন ভিস্তারার ভয়াল উড়ানের এক যাত্রী। শুভ দাস নামে কলকাতা লাগোয়া বাঁশদ্রোণীর ওই বাসিন্দা জানিয়েছেন, গত এপ্রিল থেকে অন্তত ৩ বার মৃত্যুমুখ থেকে ফিরেছেন তিনি। এর পর সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন ওই যুবক। ভিস্তারার উড়ানে ঝটকায় গুরুতর আহত হয়েছেন তাঁর বাবা। তাঁর বড় অস্ত্রোপচার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
৩৯ বছর বয়সী শুভ মুম্বইয়ে শিল্পপতিদের বাড়ি দেখভালের কাজ করেন। গত এপ্রিলে করোনা আক্রান্ত হন তিনি। গত ১৬ এপ্রিল শ্বাসকষ্ট বাড়লে তাঁকে মুম্বইয়ের হাসপাতালে ICCU-তে ভর্তি করা হয়। দিন কয়েক ভর্তি থাকার পর সেখানে আগুন লাগে। আগুনে ICCU-তে ভর্তি ১৭ জন রোগীর মধ্যে ১৫ জনেরই মৃত্যু হয়। বেঁচে যান শুভ।
এর পর সুস্থ হয়ে মে মাসটা মুম্বইতেই ছিলেন তিনি। গত ৭ জুন মুম্বই থেকে ভিস্তারার বিমানে কলকাতা ফিরছিলেন তিনি। অবতরণের ১৫ মিনিট আগে ভয়াবহ এয়ার পকেটে পড়ে বিমানটি। অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাঁপতে শুরু করে বোয়িং ৭৩৭ বিমান। সেই মুহূর্তের কথা মনে করে শুভ বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম এবার মারাই যাব। বিমানের ক্যাপ্টেন বারবার যাত্রীদের শান্ত থাকতে বলছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমে খারাপ হচ্ছিল। হঠাৎ সিটবেল্ট বাঁধার বাতি জ্বলে উঠল। বিমানসেবিকারা ছুটে এসে যাত্রীদের সিটবেল্ট বাঁধতে বললেন। তার পরই বিমান ভয়ানক লাফাতে শুরু করল। সেই কয়েকটা মিনিট যেন শেষই হতে চাইছিল না।’
শুভ জানিয়েছেন, তাঁর বাবার তিমির দাসের বয়স ৭৭ বছর। ঘাড়ে গুরুতর চোট লেগেছে তাঁর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাঁর বড় অস্ত্রোপচার করা দরকার। ঘটনার স্মৃতি মনে করে শুভ বলেন, ‘বাবা সিটবেল্ট পরেই ছিল। তবে সেটি ঠিক করে বাঁধা ছিল কি না জানি না। বিমানটি লাফাতে শুরু করতেই সিটবেল্ট খুলে যায়। বাবা উলটো হয়ে সিট থেকে লাফিয়ে প্রথমে বিমানের ছাদে ধাক্কা খান। তার পর আমার সিটে এসে পড়েন। এর পর বিমানের গলিপথে পড়ে যান তিনি।’
শুভর অভিযোগ, ‘অবতরণের পর বাবাকে অন্তত ৯০ মিনিট বিমানেরই একটি সিটে শুইয়ে রাখা হয়। প্রথমে আমাদের জানানো হয় বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। তার পর জানানো হয়, একটিই অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে, সেটি কয়েকজন যাত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছে।’
সোমবার বিকেলের ওই উড়ানে ১২৩ জন যাত্রী ছিলেন। ঘটনায় আরও ২ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের মাথা ফেটেছে। আরেকজনের হাত ভেঙে গিয়েছে।