বিধানসভার অধ্যক্ষ পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়ের নাম ঘোষণা করতেই প্রতিবাদে সুর চড়িয়েছে বিরোধী দল বিজেপি। এদিকে এই ঘটনায় অনেকেরই মনে পড়ছে পাঁচ বছর আগে মানস ভুঁইয়ার পিএসি চেয়ারম্যান হওয়ার ঘটনা। সেই মানস ভুঁইয়া আজ রাজ্য সরকারের জলসম্পদ মন্ত্রী। তাঁর দাবি করেন যে মুকুল রায়ের নিয়োগ ঠিকই রয়েছে। সবংয়ের বিধায়কের প্রশ্ন, আমি হতে পারলে মুকুল রায় না কেন?
পাঁচ বছর আগের ঘটনা মনে করে মানস ভুঁইয়া বলেন, 'পাঁচ বছর আগে আমাকে নিয়েও এরম বিতর্ক হয়েছিল। আমি কংগ্রেসের প্রবীণতম নেতা ছিলাম। দলের পক্ষ থেকে পিএসিতে মনোনয়ন পাই। আমার নাম অধ্যক্ষ চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেন। তবে আমার নিজের দল তা মানতে পারেনি। কংগ্রেস দাবি তোলে সিপিএমের সুজ চক্রবর্তীকে চেয়ারম্যান করতে হবে। আমাকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। তবে আণি পদত্যাগ করিনি। এরপর কংগ্রেস আমাকে সাসপেন্ড করে। আমার প্রশ্ন, আমি হতে পারলে আজকে মুকুল রায়কে নিয়ে আপত্তি কেন?'
তবে মানস ভুঁইয়ার যুক্তি মানতে নারাজ শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য, '২০১৬ সালে যা হয়েছিল, সেই ঘটনার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। কারণ সেই সময় মানস ভুঁইয়া কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। আর এখন মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তাই দুটি বিষয়কে এক করে দেখা উচিত নয়।'
প্রসঙ্গত, সরকারের সমস্ত কাজের হিসেব রাখার দায়িত্ব থাকে পিএসি-র। সেই কারণেই সংসদীয় প্রথা হল এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় বিরোধী দলের কোনও জনপ্রতিনিধিকে। লোকসভায় যেমন এখন ওই কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই নিয়ে তৃতীয়বার এমন একজনকে পিএসি-র মাথায় বসানো হল, যিনি খাতায়-কলমে বিরোধী দলের বিধায়ক হলেও শাসক দলের সঙ্গে রয়েছেন। এর আগে কংগ্রেস বিধায়ক হিসেবে মানস ভুঁইয়া ও শঙ্কর সিংকে এই পদ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা ততদিনে তৃণমূলে যোগদান করে ফেলেছেন। এবার মুকুল রায়ের ক্ষেত্রেও তাই হল। তিনি খাতায়-কলমে বিজেপি বিধায়ক। কিন্তু ইতিমধ্যে তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন।