করোনা আক্রান্ত নয়, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পারবেন শুধুমাত্র করোনা আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিরা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নির্দেশিকা জারি করে স্পষ্ট করতে হল স্বাস্থ্য দফতরকে। সোমবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী জানান, এবার থেকে করোনা রোগীদের বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা করা যাবে। যা শুনে আঁতকে উঠেছিলেন সবাই।
সোমবার রাতে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে জারি নির্দেশিকায় স্পষ্ট করা হয়েছে, করোনা রোগীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংস্পর্শে আসা ব্যক্তির বাড়িতে জায়গা থাকলে তিনি উপযুক্ত সতর্কতা নিয়ে বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে থাকতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাঁকে সমস্ত নির্দেশিকা বুঝিয়ে দেবেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। বাড়িতে থাকলেও তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কখনো হস্তক্ষেপের প্রয়োজন হলে সঙ্গে সঙ্গে তা করা হবে।
এর পরই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করা হয়েছে, যাঁদের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসবে তাদের ক্ষেত্রে এই বিধি কার্যকর হবে না। করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা বাধ্যতামূলক।
বলে রাখি, সোমবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘যাদের ঘরবাড়ি রয়েছে। আইসোলেশনে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। তার বাড়িতে কারও করোনা পজিটিভ হলে নিজের বাড়িতে থেকেই হোম কোয়ারেন্টাইন করতে পারেন। এক্ষেত্রে গরমেন্টকে আরেকটা বার্ডেন নিয়ে তাকে তুলে আনতে হবে না। এতে মানুষের অসুবিধা হয়। লক্ষ লক্ষ লোককে তো কোয়ারেন্টাইন করা যায় না। গরমেন্টেরও লিমিট আছে।‘
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘মানুষ নিজের বাড়িতে থাকলে অনেক ভাল থাকে। একটা হসপিটালে গেলে বরং অনেক রকম রোগী আসে, মানে অনেক রকম পবলেম থাকে। কিন্তু ঘরটা কিন্তু নিজের মতো করে করা যায়। যদি কেউ মনে করে ঘরটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে আরও সুন্দর করে রাখব শুধু নিজের জন্য। আমি কারোর সথে মিশব না। আমি আমার মতো থাকব। তাহলে মনে রাখবেন হোম কোয়ারেন্টাইনটা সব থেকে মডেল কোয়ারেন্টাইন। সারা পৃথিবীতে অনেক জায়গায় এটা কিন্তু চালু হয়ে গিয়েছে। ইভেন যারা পজিটিভ কেস, সিম্পটমস নেই, তারা কিন্তু বাড়িতেই থাকছে।‘
মমতার ঘোষণা, ‘যাদের মনে করুন বাড়ির কারও হবে। তারা যদি মনে করেন বাড়িতে থাকবেন, থেকে টিটমেন্ট করবেন, কোনও অসুবিধা নেই।‘ এদের ফোনে চিকিৎসকের পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার, জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় নানা প্রশ্ন ওঠে। মারাত্মক সংক্রামক করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যখন প্রশিক্ষিত চিকিৎসক নার্সরা হিমসিম খাচ্ছেন তখন সাধারণ মানুষ তা কী করে সামলাবেন। হোম কোয়ারেন্টাইন করতে গিয়ে কোথাও সংক্রমণ ছড়ালে তার দায় নেবে কে? দেশের অন্য কোনও রাজ্য, এমনকী কেন্দ্রীয় সরকার এখনো এমন কোনও নির্দেশিকা দেয়নি। তাহলে কার নির্দেশিকার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর?