ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা! আর সেই মোখার আতঙ্কে বাগানে বাগানে এখন আম পাড়ার ধূম পড়ে গিয়েছে। অনেকেই ভাবছেন ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে হয়তো আম নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তার জেরেই তারা আগাম আম পেড়ে ফেলছেন। তার জেরে বাজারে আচমকাই আমের যোগান বাড়তে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, এই মোখার কল্যাণেই আমের দাম একেবারে ঝপ করে কমে গিয়েছে। গত বছর এই সময় হিমসাগর আমের দাম ১৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। এবার সেই আমের দামই কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ টাকা প্রতি কেজি।
তবে বাংলার উপকূলে আদৌ মোখার কতটা প্রভাব পড়বে তা এখনও পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত নয়। কিন্তু আম চাষিরা আর কোনওভাবেই ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। অনেকেরই আমফান ঘূর্ণিঝড়ের কথা মনে আছে। সেবার প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেকারণে এবার ক্ষয়ক্ষতি যতটা সম্ভব কমানোর ব্যাপারে চেষ্টা চালাচ্ছেন আম চাষিরা।
তবে বহু বাগানেই এখনও পর্যন্ত আম সেভাবে পাকেনি। সেক্ষেত্রে বাজারে এখন যে আম আসছে তা মূলত কাঁচা আম। কিন্তু কাঁচা আমের সেভাবে দাম মিলবে না। সেকারণে কৃত্রিম উপায়ে আম পাকানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে কার্বাইড দিয়ে আম পাকানোর চেষ্টা করছেন আম ব্যবসায়ীরা।
বাংলার অন্যতম আমের বড় ফলন হয় মালদায়। সেখানকার আম বাগানেও দুশ্চিন্তা গ্রাস করছে। মোচা যদি আছড়ে পড়ে তবে আম বাঁচানো যাবে না। আবার আম এখন পেড়ে ফেললে তা কাঁচা থেকে যাবে। সব মিলিয়ে উভয় সংকটে পড়েছেন আম চাষিরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই মাসের শুরুর দিকে ১০০ টাকা প্রতি কেজি দরে আম বিক্রি হয়েছিল। গত সপ্তাহে সেই আমের দাম কমে দাঁড়িয়েছিল ৫০ টাকা প্রতি কেজি। এমনকী ২০ টাকা প্রতি কেজি দরেও আম বিক্রি হচ্ছে। সেই সঙ্গেই ছোট সাইজের আম ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রির নজিরও রয়েছে।
এদিকে একবার গাছ থেকে পেড়ে ফেলার পরে আম দ্রুত পচতে শুরু করে। আবার ঝড়ে আম পড়ে গেলে সেই আমের আর দাম পাওয়া যাবে না। সেকারণে অনেকেই যা দাম পাচ্ছেন তাতেই আম বেচে দিচ্ছেন চাষিরা।
এদিকে নদিয়ার মাজদিয়াতে আমের বড় পাইকারি বাজার। সেখান থেকে কলকাতার কোলে মার্কেট, মেছুয়াতে আসে। কিন্তু সেখানে আচমকা আমের যোগান এত বেড়ে গিয়েছে যে দাম ক্রমেই কমছে বলে খবর।