গতবছর করোনার বাড়বাড়ন্তের কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। এবছর মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ লক্ষ ২৬ হাজার ৮৬৩ জন। যা রেকর্ড বলেই মনে করছে শিক্ষা মহলের একাংশ। কিন্তু, এবছর বহু পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসেনি। পরীক্ষার প্রথম দিন বিভিন্ন স্কুলে পরীক্ষার্থীরা যেভাবে অনুপস্থিত ছিল তা উদ্বেগ বাড়িয়েছে প্রশাসনের। যদিও মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের পক্ষ থেকে এই সংখ্যাটা এখনো পর্যন্ত জানানো হয়নি। তবে প্রথমদিন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা যেভাবে গরহাজির ছিল তা চিন্তা বাড়িয়ে দেওয়ার মতই। কারণ, এর আগে কোনওদিন এত সংখ্যায় মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী গরহাজির ছিল না।
পরীক্ষার্থীদের গরহাজির নিরিখে এগিয়ে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। এই জেলার রাজা বিজয় সিংহ বিদ্যালয় ২৮১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। কোচবিহারের পশ্চিমবঙ্গ কুমারী হাইস্কুলে ৪১০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৬ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি। আবার কল্যাণীর ৭ টি পরীক্ষাকেন্দ্রে ২৬ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এখন পরীক্ষার্থীরা কেন হাজির হয়নি তার সঠিক কারণ বলতে পারছে না মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
তবে শিক্ষক মহলের একাংশের মতে, এবছর মাধ্যমিকে অ্যাডমিট বিভ্রাট দেখা দিয়েছে যার ফলে না পেয়ে অনেকেই পরীক্ষায় বসতে পারেনি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ আবার জানাচ্ছে অনেকেই অসুস্থ থাকার কারণে তারা হাসপাতালে মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছে। আবার ক্লিপবোর্ড স্বচ্ছ না থাকার কারণেও অনেককে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তবে দেখা যাচ্ছে ফর্ম ফিলাপ করার পরেও বহু পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ডই নিতে আসেনি। এমনটাই জানালেন, কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস। তিনি বলেন, ‘ফর্ম পূরণ করার পরেও অনেকে অ্যাডমিট কার্ড নিতে আসেনি।’
শিক্ষক মহলের একাংশের মতে, অনেক পরীক্ষার্থী এবার ভেবেছিল হয়তো করোনার কারণে অফলাইনে পরীক্ষা হবে না। ফলে সেই মতো তারা প্রস্তুত ছিল না। কিন্তু, তাদের প্রত্যাশা মতো অনলাইনে পরীক্ষা না হওয়ায় পরীক্ষায় বসেনি। পাশাপাশি প্রায় গত দু'বছর ধরে পঠন-পাঠনে অনিয়ম চলে আসায় অনেক মাধ্যমিক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তার ওপর অনেক ছাত্র আবার জীবিকার জন্য ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছে। যার ফলে বহু পরীক্ষার্থী এবার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়নি বলে মনে করছে শিক্ষক মহলের একাংশ। বীরভূমের বিনুরিয়া সুমিত্রা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা অদিতি মুখোপাধ্যায় মজুমদার বলেন, ‘করোনায় প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনার সঙ্গে অনেক পড়ুয়ারই দূরত্ব বেড়েছে। ফলে তারা পরীক্ষা দেয়নি।’