রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের নিয়মিত ধরপাকড়ে সবজি থেকে শুরু করে আনাজের দাম নামতে শুরু করেছিল। কিন্তু এখন আবার তা উর্দ্ধমুখী হচ্ছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ কলকাতার বাজারে এখন শাক–সবজি থেকে আনাজ এবং মাছ মাংসের দাম বেশ চড়তে শুরু করেছে। কারণ ডিভিসি জল ছেড়েছে। তার জেরে প্লাবিত দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুরের চাষের জমি জলের তলায়। সুতরাং সবজি বাজার আগুন। তার মধ্যেই একশ্রেণির ফড়েরা সুযোগ বুঝেই কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াতে শুরু করেছে। তাই রবিবার কাঁচা সবজি, আনাজপাতি কিনতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে মধ্যবিত্তের। ইতিমধ্যেই একাধিক জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করেন কৃষি দফতরের অফিসাররা। সবজির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে টাস্ক ফোর্সকে নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে।
এদিকে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কেজি প্রতি পেঁয়াজের দাম প্রায় ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই। সামনে দুর্গাপুজোর মরশুমে। তখন যদি পেঁয়াজ সেঞ্চুরি অতিক্রম করে তাহলে নাভিশ্বাস উঠবে আমজনতার। এখনই সবজির আকাশছোঁয়া দাম। আগামীকাল সোমবার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এই পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করতে পারেন বলে সূত্রের খবর। বিক্রেতাদের দাবি, জোগান কম। তাই সবজি–আনাজপাতির দাম কেজি প্রতি ২০–৩০ টাকা করে বেড়েছে। দুর্গাপুজোর সময় আরও দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষদিকে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবারও বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
আরও পড়ুন: শাক–সবজির বাজারে আগুন দর, সেঞ্চুরির দোরগোড়ায় পেঁয়াজ, বানভাসী অবস্থা দায়ী
আরও পড়ুন: ‘প্রতিবাদের পূর্ণ স্বাধীনতা আমারও থাকবে’, নিজেকে মুক্ত বলে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট জহরের
অন্যদিকে এখন বাজারে যে দাম সবজির ও আনাজের হয়েছে তাতে হাত পুড়তে শুরু করেছে। রোজ পকেটে চাপ বাড়ছে আমজনতার। চোখে জল আসছে আনাজের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধির ঝাঁঝে। পেঁয়াজের দাম বেড়ে এবার দাঁড়াল ৮০ টাকা প্রতি কেজি। সেটা অন্যান্য জায়গায় ৯০ টাকারও বেশি। সুতরাং ভরসা রাখতে হচ্ছে সুফল বাংলার উপর। হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর, আমতা এবং হুগলির ধনেখালি, পুরশুড়া, আরামবাগে চাষের জমিতে জল জমে গিয়েছে। তার ফলে অনেক জায়গাতেই মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
এছাড়া দুর্গাপুজোর আগে শহর এবং গ্রামবাংলায় একাধিক সুফল বাংলার স্টল খোলা হবে বলে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আবহে আলুর দাম উর্দ্ধমুখীই রয়েছে। জ্যোতি আলু ৩২ থেকে ৩৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে। চন্দ্রমুখী আলু ৪০ টাকা কেজি। আর কোথাও কোথাও ৪৫ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে। পটল ৬০ টাকা, কুমড়ো ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৬০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, ফুলকপি ৭০ টাকা পিস, বাঁধাকপি ৫০ টাকা কেজি এবং টম্যাটো ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই বিষয়ে টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে বলেন, ‘হাওড়া–হুগলিতে চাষের জমি জলের তলায়। তবে প্রভাব পড়েনি দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া থেকে আসা সবজিতে। একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী সবজির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।’