এক ব্যক্তি এক পদ নীতিতে নানা রদবদল হতেই পুরসভা নির্বাচন নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, পুজোর পরই হবে পুরসভা নির্বাচন। তাই এই রদবদল করা হয়েছে। আবার কেউ বলছেন সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে হতে পারে পুরসভা নির্বাচন। যদিও এই নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। একসঙ্গে রাজ্যের প্রায় ১০০ পুরসভা ও পুরনিগমের পরিচালকমণ্ডলীতে রদবদলের সরকারি সিদ্ধান্তের জেরে জোর চর্চা শুরু হল।
তৃণমূল কংগ্রেসের ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতিতে বড় সংখ্যায় পরিবর্তন হয়েছে বিভিন্ন পুরসভায়। যাঁরা মন্ত্রী রয়েছেন, তাঁদের সরানো হয়েছে পুর–প্রশাসন থেকে। ব্যতিক্রম কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম। তিনি মন্ত্রী হয়েও এই পদে আছেন। কিন্তু দক্ষিণ দমদম পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী থেকে বাদ পড়েছেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। বাদ পড়েছেন আসানসোল পুরসভার পরিচালকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন তবস্সুম আরা।
পানিহাটি প্রশাসকমণ্ডলীর উপপ্রধান হিসেবে কৌশিক চট্টোপাধ্যায়কে মনোনীত করা হয়েছে। একুশের নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। আবার জলপাইগুড়ি পুরসভায় ১২ জনের তালিকায় থাকা শুভজিৎ কর ফেব্রুয়ারি মাসে বিজেপিতে যোগ দেন। হাওড়া পুরসভায় প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান পদে নতুন মুখ আনা হয়েছে। মন্ত্রী অরূপ রায়কে সরিয়ে এসেছেন সুজয় চক্রবর্তী। বিধাননগর পুরসভার পরিচালকমণ্ডলী থেকে সরানো হয়েছে বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়কে।
এদিকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান পদ থেকে দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরিয়ে আনা হয়েছে বড়জোড়া পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অর্চিতা বিদকে। কাঁথি পুরসভার পরিচালকমণ্ডলীর প্রধান পদেও বদল করা হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দুকে সরিয়ে দেওয়া হয়। একমাস আগে দায়িত্ব নেওয়া সিদ্ধার্থ মাইতিকে সরিয়ে এবার আনা হয়েছে হরিসাধন অধিকারীকে।
অন্যদিকে ব্যাপক রদবদল হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। গাইঘাটা, হাবরা, অশোকনগরে প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান ও উপপ্রধান পদে নতুন মুখ আনা হয়েছে। জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক–ঘনিষ্ঠরাই বাদ পড়েছেন। গারুলিয়া পুরসভায় প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান পদ থেকে প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল সিংয়ের ভাই সঞ্জয় সিংকে সরানো হয়েছে। সঞ্জয়ের জায়গায় আনা হয়েছে রমেন দাসকে। রাজপুর–সোনারপুরের প্রশাসকমণ্ডলী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে নজরুল আলি মণ্ডলকে। বজবজ প্রশাসকমণ্ডলীর প্রধান গৌতম দাশগুপ্তের অপসারণও হয়েছে। সুতরাং এই রদবদল পুরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।