কেবল ফল্ট-এর জেরে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাটে শুক্রবার ব্যাহত হল কলকাতা বিমানবন্দরের পরিষেবা। তার ফলে বিপাকে পড়লেন অসংখ্য যাত্রী। অভিযোগের আঙুল উঠল কলকাতা মেট্রো রেল নিগমের দিকে।
বৃহস্পতিবার কেবল ফল্ট-এর কারণে বিমানবন্দরের টার্মিনাল বিল্ডিংয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। পরের দিন সকালেও সেই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় তিরিশটির বেশি উড়ান আধঘণ্টা থেকে একঘণ্টা বিলম্বিত হয়। বেশ কিছু বিমান আবার যাত্রীদের মালপত্র ছাড়াই ওড়ে। ফলে গন্তব্যে পৌঁছলেও নাকাল হন যাত্রীরা।
জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনাবশত একই সঙ্গে ছয়টি হাই টেনশন বিদ্যুৎবাহী কেবল ছিঁড়ে যাওয়ার কারণেই এই বিপর্যয় দেখা দেয়। তার সঙ্গে হেভি-ডিউটি ব্যাকআপ জেনারেটারগুলি ট্রিপ করলে বড়সড় বিপর্যয় ঘটে। মেরামতিতে নেমে কালঘাম ছোটে বিমানবন্দর, মেট্রো রেলওয়ে এবং সিইএসসি-র ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের।
বিমানবন্দরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭.৩০ থেকে রাত ৭.৩০ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আকার ধারণ করে সমস্যা, যখন টার্মিনাল ভবনে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ডিজেল জেনারেটার পর পর সাত বার ট্রিপ করে। অচল হয়ে যায় এরোব্রিজ, ব্যাগেজ স্ক্যানিং ও লোডিং পরিষেবা। বন্ধ হয়ে যায় লিফ্ট ও এসকেলেটরগুলি। সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনিং ব্যবস্থাও কাজ করা বন্ধ করে।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা দেখা দেয় ব্যাগেজ ট্রান্সফার বিভাগে। কনভেয়র বেল্টগুলি কাজ না করায় মালপত্র হাতে তুলে নিয়ে পরবর্তী স্তরে পাঠাতে হয়। এর ফলে অনেক সময় নষ্ট হয় এবং উড়ান বিলম্বিত হয়। কিছু ক্ষণ পরে যাত্রীদের মালপত্র ছাড়াই ওড়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় একাধিক উড়ান সংস্থা। জানানো হয়, ‘পরবর্তী বিমানে মালপত্র পাঠানো হবে।’
ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়া মঞ্চে। বহু যাত্রী ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনরা ব্যাগেজের হদিশ করতে না পেরে উদ্বেগ প্রকাশ করে টুইট করেন।
কলকাতা বিমানবন্দরের এই হঠাৎ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জন্য অভিযোগের আঙুল উঠেছে মেট্রো রেলের খননের দিকে। বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবনের বাঁয়ে থাকা উড়ালপুলের মুখেই চলেছে মেট্রো রেলের খনন। সিইএসসি-র ইঞ্জিনারদের অভিযোগ, বিদ্যুৎবাহী কেবলের গতিপথ আগাম চিহ্নিত করা সত্ত্বেও মাটি খুঁড়তে গিয়ে ৮ ফিট গভীরে থাকা সেই কেবল কেটে ফেলে মেট্রো রেলের যন্ত্র। তার জেরেই ঘটে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিপর্যয়।