কালীঘাটের বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পরে সুর চড়ালেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। শনিবার রাতে কালীঘাট থেকে সল্টলেকের স্বাস্থ্যভবনের অবস্থান মঞ্চের কাছে ফিরে আসার পরে জুনিয়র ডাক্তাররা দাবি করেন, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর থেকে তাঁরা ৩৫ দিন ধরে রাস্তায় আছেন। প্রয়োজন পড়লে আরও ৩৫ দিন রাস্তায় থাকবেন। তাঁদের দমানো যাবে না। সেইসঙ্গে কটাক্ষের সুরে জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসিকে অভিজিৎ মণ্ডলকে যে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেটার খবর হয়ত আগেই পৌঁছে গিয়েছিল কালীঘাটে। তাই হয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা বৈঠক করার সাহস দেখাতে পারেননি বলে অভিযোগ তোলেন আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা। যাঁরা দাবি করেছেন যে লাইভস্ট্রিমিং, ভিডিয়ো রেকর্ডিং নিয়ে কালীঘাটে দীর্ঘক্ষণ জট তৈরি হয়েছিল। শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর আর্জিতে কোনওরকম ভিডিয়ো রেকর্ডিং ছাড়াই তাঁরা বৈঠকে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা যখন সেই সিদ্ধান্তের কথা জানান, তখন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন যে তাঁরা দেরি করে ফেলেছেন।
সন্দীপের গ্রেফতারিতে উচ্ছ্বসিত জুনিয়র ডাক্তাররা
সেই বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার মধ্যেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সন্দীপের গ্রেফতারি পান জুনিয়র ডাক্তাররা। তারপর স্বাস্থ্যভবনের অবস্থান মঞ্চে এসে এক আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারের কথায়, ‘এখন কী মনে হচ্ছে, বলুন তো! এই যে কিছুক্ষণ আগে আমাদের সহকর্মীর রেপ এবং মার্ডার কেসে এই যে সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার (প্রাক্তন) ওসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই খবরটা তাঁরা (চ) পেয়ে গিয়েছিলেন। তাই হয়তো এই মিটিং করার সাহস পাননি।’
‘সন্দীপ ঘোষদের সুতো কোথায় বাঁধা?’
জুনিয়র আন্দোলনের অন্যতম প্রতিনিধি দাবি করেন, সন্দীপ এবং অভিজিৎকে গ্রেফতারির পরে এটা প্রমাণ হয়ে গেল যে তাঁরা যতগুলি দাবি তুলেছেন, প্রতিটি নায্য দাবি। সেইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ‘এই সন্দীপ ঘোষ, এই টালা থানার ওসির সুতো কোথায় বাঁধা? এই স্বাস্থ্যভবন, এই বিনীত গোয়েল। যিনি কলকাতার পুলিশ কমিশনার।’
উল্লেখ্য, জুনিয়র ডাক্তাররা যে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে স্বাস্থ্যভবনের সামনে অবস্থান করছেন, তাতে যে দাবিগুলি তোলা হয়েছে, তার মধ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব, কলকাতার পুলিশ কমিশনার, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য অধিকর্তারও ইস্তফার দাবি আছে।