অনুগামীদের দাদাকে নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতিতে জল্পনা তৈরি হয়েছে। সেটা অবশ্য দাদা নিজেই তৈরি করেছেন। তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের তরুণ তুর্কি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রীও বটে। তাই শুভেন্দু অধিকারীর ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা এখন তুঙ্গে। এই পরিস্থিতিতে সদলবলে কালীঘাটে গিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন মানস ভুঁইয়া, অজিত মাইতির মতো মেদিনীপুরের তৃণমূল নেতারা। ভাইফোঁটার দিন বিকেলে দলনেত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন তাঁরা।
এই বিষয়ে যখন চর্চা শুরু হয়েছে তখন সবংয়ের ভূমিপুত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘নেত্রীর সঙ্গে আমরা সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। নমস্কার জানালাম। তিনি আমাদের শুভেচ্ছা দিলেন। আমরা তাঁর নেতৃত্বে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি।’ এই ঐক্যবদ্ধ শব্দটি নিয়ে এখন কালচার শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। সূত্রের খবর, গোটা মেদিনীপুরের সংগঠন অনেকটা নির্ভর করে শুভেন্দু অধিকারীর উপর। সেখানে তিনি এখন বেসুরো গাইছেন। আর তাতে তাল–জ্ঞান ঠিক রাখতে না পেরে তৃণমূল সুপ্রিমোর দ্বারস্থ হলেন মানসবাবুরা। আর বার্তা পেলেন পরিস্থিতি যাই হোক ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। কারণ সামনে বিধানসভা নির্বাচন।
জানা গিয়েছে, সোমবার বিকেলে জেলার বিধায়ক, দলের কয়েকজন পদাধিকারী, শাখা সংগঠনগুলির সভাপতিদের নিয়েই কালীঘাটে দলনেত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন মানস, অজিতরা। জেলা থেকে একসঙ্গে এভাবে কালীঘাটে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগী হন অজিতই। তার পিছনে জেলায় দলের সকলের ঐক্যবদ্ধ চেহারাটা দেখানোর কৌশল ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ শুভেন্দুকে নিয়ে জল্পনার মধ্যে দলনেত্রীর সঙ্গে এই সাক্ষাৎ তাৎপর্য দেখছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। মানসের অবশ্য দাবি, ‘অন্য কোনও পরিস্থিতি নেই। সব পরিস্থিতি মমতাময়।’ আসলে ঐক্যবদ্ধ চেহারা দেখাতে গিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে চলার বার্তা পেয়েছেন তাঁরা। তাই এই মন্তব্য বলে মনে করা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে খবর, খড়্গপুরের (গ্রামীণ) বিধায়ক দীনেন রায়, নারায়ণগড়ের বিধায়ক প্রদ্যোত ঘোষ, গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী, দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান, খড়্গপুরের (সদর) বিধায়ক প্রদীপ সরকার প্রমুখের সঙ্গে কথা বলেছেন দলনেত্রী। নাম ধরে একাধিক বিধায়ককে এলাকায় দলের সকলকে নিয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে এই বৈঠকে দলনেত্রী বলেছেন, ‘জন্মদাত্রী মায়ের সঙ্গে কখনও বেইমানি করতে নেই।’