বাংলাদেশ পরিস্থিতির প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশাতেও। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলাদেশি সন্দেহে মারধর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ সামনে আসছে। এই অবস্থায় ইতিমধ্যেই ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী কাছে বাংলার শ্রমিকদের নিরাপত্তা চেয়ে ফোনে আর্জি জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, তারপরে বাঙালি শ্রমিকদের উপর অত্যাচার থামছে না। এই অবস্থায় প্রাণভয়ে দলে দলে রাজ্যে ফিরে আসছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। বাংলায় ফিরে আসার পরেই ওড়িশার মানুষ এবং পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উপড়ে দেন পরিযায়ী শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: নথিভুক্ত সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিককে দিতে হবে রেশন কার্ড, সুপ্রিম নির্দেশ
জানা গিয়েছে, নিরাপত্তাজনিত কারণে গত কয়েকদিন ধরে বাংলায় দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে আসছেন। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক বাংলায় ফিরেছেন। গত সপ্তাহেও অনের পরিযায়ী শ্রমিক বাংলায় ফিরে এসেছেন। হাওড়া স্টেশনে নামার পরেই তারা ওড়িশা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন। তাদের দাবি, বাংলাদেশি সন্দেহে তাদের ধরে ধরে মারধর করা হচ্ছে। এমনকী তারা পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক বললেও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ভোটার কার্ড, আধার কার্ড দেখালেও তাদেরকে মারধর করা হচ্ছে।
শুধু তাই নয় সেখানকার পুলিশও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমন অবস্থায় নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন বাংলার শ্রমিকরা। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ফেরিওয়ালারা। অনেকে আছেন যারা কয়েক দশক ধরে ওড়িশায় ফেরিওয়ালা হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু, তাদেরকে বাংলাদেশি সন্দেহে মারধর করায় এখনও ভয়ে তারা পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক মারধরের ভিডিয়ো দেখান। একজন বলেন, ‘বাংলাদেশ অস্থির হওয়ার পর থেকেই আমাদের উপরে অত্যাচার শুরু হয়েছে।’
এদিকে, পরিযায়ী শ্রমিকরা দলে দলে বাড়ি ফেরায় হাওড়ায় সিটি পুলিশের তরফে বিশাল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ওড়িশায় যাতে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর এই ধরনের মারধরের ঘটনা না ঘটে সে বিষয়ে মোহন চরণের কাছে কয়েকদিন আগেই আর্জি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আর্জির পরেই ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন যে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে সেবিষয়টি সরকারের তরফে দেখা হবে। তারপরও সেখানে বাঙালি শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার অব্যাহত রয়েছে।