নিট পরীক্ষার ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ উঠেছে, যা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই ঘটনায় কেন্দ্রের সমালোচনা করে জানিয়েছেন, মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা পুনরায় রাজ্যের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
ব্রাত্য বসু সংবাদমাধ্যমকে জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতার কারণে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীর ভবিষ্যত নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। তিনি বলেন, "এটা কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা। আমাদের রাজ্যের শিক্ষক দুর্নীতি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, তদন্ত হয়েছে, গ্রেফতারও হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের এই নিট পরীক্ষা, যা সারা ভারতের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সম্মানের, সেটার ক্ষেত্রে যা হল, তা গোটা দেশ দেখছে। এই ঘটনায় কোনও তদন্ত হবে না? সিবিআই বা ইডি মাঠে নামবে না? এই ব্যর্থতার পর আমার মনে হয়, কেন্দ্রীয় সরকারকেই পরীক্ষাটি রাজ্যের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।"
আরও পড়ুন। দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে নবান্ন–রাজভবন চাপানউতোর তুঙ্গে, বাড়ছে সংঘাতের আবহ
উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে নিট পরীক্ষার মাধ্যমে সর্বভারতীয় স্তরে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি শুরু হয়। এর আগে রাজ্যের বোর্ডগুলি পৃথকভাবে মেডিক্যালে প্রবেশিকা পরীক্ষা নিত। সেই পরীক্ষার মাধ্যমে রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতেন। কিন্তু ২০১৪-২০১৫ সালেও এই ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হয়নি, কারণ বিভিন্ন বোর্ডের আপত্তি ছিল। ২০১৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্থির হয়, সর্বভারতীয় ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর দাবি, রাজ্যের হাতে পরীক্ষা ফিরিয়ে দেওয়া হলে এই ধরনের কারচুপি এড়ানো সম্ভব হবে। তিনি বলেন, "নিট পরীক্ষার কারচুপির অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতার প্রমাণ। এর জন্য সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া উচিত।"
আরও পড়ুন। …BJP কর্মীরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে গিয়ে আত্মহত্যা করবেন: সুকান্ত মজুমদার
তবে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকার কারণে নিট পরীক্ষা পুনরায় রাজ্যের হাতে ফেরত আসা সহজ হবে না। ক্যাবিনেটের সিদ্ধান্তের পর বিশেষ কোনও ব্যবস্থা ছাড়া এই পরীক্ষা রাজ্যের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন শিক্ষামহল।
তবে শিক্ষমন্ত্রীর এই মন্তব্য কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে নতুন করে দাড়ি টানাটানির পথ প্রশস্ত করতে পারে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।