আরজি কর আন্দোলন কার্যত নাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্বকে। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ঝড়, বৃষ্টির মধ্য়েই ধর্নায় বসেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এমনকী মুখ্য়মন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতেও বৈঠকে গিয়েছেন তাঁরা। তবে এসবের মধ্য়েই জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুুরী। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন নিয়ে রীতিমতো বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তিনি।
খোদ মুখ্যমন্ত্রী যখন বৈঠক করতে চাইছেন জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে, মুখ্যমন্ত্রীর দোরগোড়া পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয় জুনিয়র ডাক্তারদের বাসকে এতটাই আপ্যায়ন, আর সেই মন্ত্রিসভার সদস্য সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী এমন মন্তব্য করলেন যা নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, ভণ্ডামি করছেন, বাড়াবাড়ি করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আন্দোলনকারীদের পেছনে কোনও রাজনৈতিক শক্তি আছে। রাজ্যের মুখ্য়মন্ত্রীকে বিশ্বাস নেই? মাইনে নেওয়ার সময় বিশ্বাস হয়। পদোন্নতির সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে বিশ্বাস হয়? যাঁরা করছেন দ্বিচারিতা করছেন, অন্যায় করছেন। বাংলার মানুষের ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না। সাফ কথা সিদ্দিকুল্লার। এখানেই প্রশ্ন জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ভণ্ডামি, দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন সিদ্দিকুল্লা। আর সেই মন্ত্রিসভারই প্রধান জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাইছেন। এটা কি দ্বিচারিতা নয়? প্রশ্ন অনেকের।
এদিকে জুনিয়র ডাক্তাররা মুখ্য়মন্ত্রীর বাড়িতে আলোচনা করতে গিয়েছেন। সঙ্গে করে তাঁরা স্টেনোগ্রাফারদের নিয়ে গিয়েছেন। কারণ মিটিংয়ের কার্যবিবরণী তাঁদের লিখতে হবে। সেই কার্যবিবরণী লেখার জন্য তাঁরা স্টেনোগ্রাফার রাখতে চেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত এই মিটিং থেকে কী বেরিয়ে আসে সেটাই দেখার। তবে মোটের উপর সেই মিটিং থেকে শেষ পর্যন্ত কী বেরিয়ে আসে সেটাই দেখার।
তবে শুধু মন্ত্রীই নন আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ আন্দোলনকে কটাক্ষ করছেন তৃণমূলের নেতা নেত্রীরাও।
মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের মালদা জেলা সংগঠনের সভানেত্রী সাগরিকা সরকার বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন। তাঁর দাবি, 'মহিলাদের ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামিয়েছে বাম ও বিজেপি'। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়েও শালীনতার মাত্রা ছাড়ালেন তিনি।
মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকে আয়োজিত একটি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন সাগরিকা। সেই অনুষ্ঠানে দলের মহিলা সদস্যরা যোগদান করেন। তাঁদের উদ্দেশে মঞ্চ থেকে ভাষণ দিতে গিয়েই 'রিক্লেইম দ্য নাইট' বা মেয়েদের রাত দখলের কর্মসূচিকে কড়া ভাষায আক্রমণ করেন সাগরিকা।
ওই তৃণমূল নেত্রীর দাবি, তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই বাম ও বিজেপি মহিলাদের ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামাচ্ছে! আর জি করের ঘটনার নিন্দা করলেও মহিলাদের রাত দখলে ঘোরতর আপত্তি জানান সাগরিকা।
তাঁর আরও অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীকে পদচ্যুত করতেই বাম-বিজেপি চক্রান্ত করছে। সেই কারণেই মহিলাদের ভুল বোঝানো হচ্ছে বলেও বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাম-বিজেপি যদি তাঁদেরও 'ভুল বোঝাতে আসে', তাহলে তাদের বয়কট করতে হবে। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীর নামে যে বিজেপি নেতা ও কর্মীরা কুৎসা করছেন, কোমর বেঁধে, ঝাঁটা হাতে তাঁদের মোকাবিলা করতে হবে বলেও জানিয়েছেন সাগরিকা।