কারও নাম বলেননি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কোনও দুর্বৃত্তের নামও বলেননি। তিনি শুধু বলছেন দিদি শব্দটি। কলকাতা হাইকোর্টে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় শুনানি চলাকালীন তিনি বলেছেন, দিদি একা আর সামলাতে পারছেন না। চারপাশে এত দুর্বৃত্ত থাকলে তিনি সামলাবেন কী করে? এর সঙ্গেই ভূপেন হাজারিকার একটি গানের কলিও স্মরণ করিয়ে দেন, হাজার টাকার বাগান খাইলো পাঁচ সিকার ছাগলে। না কোথাও কারোর নাম উল্লেখ করেননি তিনি। তবে অনেকেই বলছেন, কিছু না বলেও অনেক কথা বলে দিয়েছেন খোদ বিচারপতি। এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে শাসকদলের অন্দরে।
দিদি বলতে তিনি ঠিক কাকে বোঝাতে চেয়েছেন সেটা নিয়ে জোর চর্চা রাজ্যজুড়ে। এদিকে মানিক ভট্টাচার্যের মামলা প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় মানিকের লন্ডনের বাড়়ির প্রসঙ্গও তুলে আনেন। তিনি জানিয়েছেন, লন্ডনের কোথায় মানিকের বাড়ি আছে তা তিনি জানেন। তিনি এটাও জানেন সেই বাড়ির পাশে এমন একজনের বাড়ি রয়েছে তিনি নিজেও রাজনৈতিক নেতা।এরপর সিবিআইয়ের প্রতি বিচারপতির প্রশ্ন, কতবার লন্ডনে গিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য? তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানেন? আমি বলতে পারি! শুনবেন? লন্ডনে তাঁর বাড়ির পাশে কার বাড়ি জানেন? আমি জানি। জানিয়েছেন বিচারপতি।
এর পাশাপাশি বিচারপতি জানিয়েছেন, মানিক ভট্টাচার্য এখনও বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেননি, এটা লজ্জার বিষয়। অর্থাৎ তিনি ফিরে এসে আবার এসব শুরু করবেন। রাজ্যটা কি এভাবে নষ্ট হয়ে যাবে? প্রশ্ন বিচারপতির।
এদিকে মানিক ভট্টাচার্যর মামলা সম্পর্কে কিছু অগ্রগতি হয়েছে বলে এদিন আদালতে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। মানিকের দুটি পাসপোর্ট রয়েছে বলেও এদিন আদালতে জানানো হয়। এনিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি। সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে আমরা কিছু এসএমএস উদ্ধার করেছি।
তবে অভিজ্ঞ মহলের মতে, এদিন আদালতে সব কিছুকে ছাপিয়ে যায় বিচারপতি অত্যন্ত ইঙ্গিতবাহী মন্তব্য। অনেকের মতে রাজ্যবাসীর মনের কোণে চেপে রাখা কথাটাই যেন এদিন শোনা গেল বিচারপতির মুখে। এই কথা শুনে শাসকদলের অস্বস্তি বাড়লেও সাধারণ মানুষ অত্যন্ত স্বস্তি পেয়েছেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
পাশাপাশি মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে কেন দল এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি? কীভাবে তিনি লন্ডনে বাড়ি করলেন? কোন দুর্বৃত্তরা ঘিরে রয়েছে? দিদি আসলে কে? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বঙ্গবাসী।