সল্টলেকে বাড়ির ছাদ থেকে উদ্ধার হল ২৫ বছর বয়সী এক যুবকের কঙ্কাল। ওই যুবক নিখোঁজ রয়েছে বলে বৃহস্পতিবার বিধাননগর পূর্ব থানায় অভিযোগ জানান তাঁর বাবা অনিলকুমার মহেনসারিয়া। আর এদিন রাতেই উদ্ধার হল ওই যুবকের কঙ্কাল। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের প্রাথমিক অনুমান, কঙ্কালটি অনিলবাবুর বড় ছেলে অর্জুনের। এ ঘটনায় পুলিশ ওই যুবকের মা ও ভাইকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে তদন্তে আসেন ফরেনসিক দলের আধিকারিকরা। তাঁরা সেখান থেকে কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন।
বিধাননগর পুলিশের গোয়ান্দারা জানান, বৃহস্পতিবার পেশায় ব্যবসায়ী অনিলকুমার মহেনসারিয়া তাঁর অভিযোগে জানান যে তাঁর বড় ছেলে অর্জুন বেশ কয়েকদিন ধরে নিখোঁজ। অনিলবাবুর সন্দেহ ছিল হয়তো তাঁর স্ত্রী গীতা অর্জুনকে অপহরণ করেছে বা তাঁকে খুন করে ফেলেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে এদিন অনিলবাবুর বাড়িতে তল্লাশি চালায় বিধানননগর পুলিশ। তখনই বাড়ির ছাদ থেকে একটি কঙ্কাল উদ্ধার হয়। কঙ্কালটি একটি কাপড়ে মোড়ানো ছিল।
পুলিশের অনুমান, কঙ্কালটি অর্জুনের। এ ঘটনায় ওই যুবকের মা গীতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ির নীচের তলার একটি ঘরে মেঝেতে কালো ছোপ ছোপ দাগ দেখা গিয়েছে। ওখানে কিছু পোড়ানো হয়েছে বলে অনুমান করছে পুলিশ। একইসঙ্গে ছাদে ওঠার সিড়িতে পাওয়া গিয়েছে ছাই।
প্রায় ৩২ বছর আগে অর্জুন ও গীতার বিয়ে হয়। তাঁদের তিন সন্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিলেন অর্জুন, বয়স ২৫। আর অন্য দু’জন হল বিদুর, বয়স ২২ এবং ২০ বছর বয়সী বৈদেহী। পুলিশ জানিয়েছে, কিছু দাম্পত্য কলহের জেরে গত বছর অগস্ট মাসে সল্টলেকের বাড়ি ছেড়ে ১০ কিলোমিটার দূর রাজারহাটে একটি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করেন অনিলকুমার মহেনসারিয়া।
জানা গিয়েছে, ২৯ অক্টোবর তিন ছেলেমেয়েকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে নিজের মায়ের বাড়িতে ঘুরতে যান স্ত্রী গীতা। মাসখানেক পর ৩০ নভেম্বর অনিল জানতে পারেন যে রাঁচিতে তাঁর মায়ের সঙ্গে নেই অর্জুন। সেদিনই গীতাকে ফোন করেন অনিল। কিন্তু তাঁর স্ত্রী অনিলকে জানান যে তাঁর সঙ্গেই রয়েছে তাঁর তিন ছেলেমেয়ে।
কিন্তু বেশ কয়েকদিন ধরে বড় ছেলে বেপাত্তা থাকায় বৃহস্পতিবার বিধাননগর পূর্ব থানায় অভিযোগ জানান অনিলবাবু। একটি মামলা দায়ের করে সল্টলেকের এজে ব্লকের ওই অভিজাত বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তখনই ছাদ থেকে উদ্ধার হয় একটি কাপড়ে মোড়ানো কঙ্কাল।