বাম–কংগ্রেস জোট হলেও কংগ্রেসের ঘরোয়া কোন্দল চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। লাগামহীন গোষ্ঠীকোন্দল দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এইসব দেখে বিরক্ত বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। এমনকী আর ভোটেই দাঁড়াবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন আবদুল মান্নান। বাধ্য হয়ে মান ভাঙাতে ময়দানে নেমেছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। জোটবদ্ধ দলকে বামেদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন তিনি।
কংগ্রেসের একটা গোষ্ঠী এবার একক লড়াই করে দেখতে চাইছে। কিন্তু তা আত্মঘাতী হতে পারে বলে মনে করছেন এই বর্ষীয়ান নেতা। আবদুল মান্নান মাস্টারমশাই এবং আজীবন কংগ্রেসি। দলবদল করেননি। সংসদীয় রাজনীতি করে মাথার চুল পাকিয়েছেন তিনি। আর তাঁর কথাই শোনা হচ্ছে না বলে তাঁর অনুযোগ।
তাহলে পরিষদীয় রাজনীতিকে কি এবার বিদায় জানানোর পালা? উত্তরে চাঁপদানির বিধায়ক বলেন, ‘আর কতদিন! হল তো অনেক। এবার থামার সময়।’ চোখেমুখে স্পষ্ট হয় দলের বর্তমান নেতাদের উপর তাঁর বিরক্তি। বিরোধী দলনেতাকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে প্রদেশ নেতৃত্ব অনেক সিদ্ধান্তই নেয় বলে একটি অংশের দাবি করা হয়।
প্রদেশ সভাপতি থাকাকালীন প্রয়াত হন সোমেন মিত্র। পরবর্তী সভাপতি কে হতে পারেন, তা নিয়ে যখন দলীয় কোন্দল তুঙ্গে তখন ময়দানে নামেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান। অধীর চৌধুরীকে সভাপতি চেয়ে হাইকম্যান্ডকে চিঠি লেখেন। আর তারপরই প্রদেশ সভাপতি হিসেবে অধীরের নাম ঘোষণা করে দিল্লি। দায়িত্ব পেয়েই নিজের মতো সংগঠন সাজাচ্ছেন তিনি। বিধান ভবন সামলাতে মুর্শিদাবাদ থেকে শহরে এনেছেন ঘনিষ্ঠদের। সূত্রের খবর, যে মান্নান অধীরকে সভাপতি করতে হাইকম্যান্ডের কাছে দরবার করেছিলেন, তিনিই এখন ব্রাত্য হয়েছেন। কান পাতলেই শোনা যায় অধীরের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক তলানিতে, মুখ দেখাদেখি বন্ধ।
সূত্রের খবর, জেলার দায়িত্বপ্রাপ্তদের তালিকা তৈরির সময় বিরোধী দলনেতার মতামত বা পরামর্শ নেওয়া হয় না। যে জেলার বিধায়ক তিনি সেই হুগলির তালিকা তৈরির সময়ও তাঁর সঙ্গে কথা বলা হয়নি বলে খবর। ভোটে আর দাঁড়াবেন না বলে ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে রেখেছেন। তবে সিদ্ধান্তের কথা হাইকম্যান্ডকে এখনও জানাননি।