এখন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে নবান্নের সরাসরি সংঘাত চলছে। লোকসভা নির্বাচন হয়ে গেলেও তা থামেনি। বরং বেড়েছে। আগেও সংঘাত চলছিল। মাঝে একটু বিরতি পড়লেও এখন তা আবার জারি হয়েছে। এই আবহে রাজভবনকে এড়িয়ে যাচ্ছে নবান্ন বলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে দুটি বিধানসভার উপনির্বাচন হয়। সেখানে জেতেন তৃণমূল কংগ্রেসের দু’জন প্রার্থী। কিন্তু দুই বিধায়কের শপথ নিয়ে নবান্নের পক্ষ থেকে রাজভবনকে কিছু জানানো হয়নি বলে অভিযোগ। ভগবানগোলার বিধায়ক নির্বাচিত হন রেয়াত হোসেন সরকার এবং বরাহনগরে জয়ী হন সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের শপথ নিয়ে সরাসরি রাজভবনে চিঠি দেয়নি পরিষদীয় দফতর বলে প্রশাসনিক মহলে চর্চা তুঙ্গে উঠেছে।
ইতিমধ্যেই ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা না করা পর্যন্ত পুলিশমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না বলেও সুর চড়িয়েছেন রাজ্যপাল। এই আবহে নতুন বিধায়কদের শপথ নিয়ে চিঠি না আসায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী নতুন বিধায়কদের শপথের জন্য রাজভবনের কাছে চিঠি পাঠায় রাজ্যের পরিষদীয় দফতর। কিন্তু এবার সেই চিঠি বিধানসভার সচিবালয়ের পক্ষ থেকে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। যদিও শপথ নিয়ে রাজভবনের পক্ষ থেকে বিধানসভায় কোনও জবাবি চিঠি যায়নি এখনও। তার পরিবর্তে এখন রাজ্যে চার সদস্যের কেন্দ্রীয় দল আসছে।
আরও পড়ুন: সিকিমে আটকে পড়েছেন বিপুল পরিমাণ পর্যটক, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে হেল্পডেস্ক চালু করল নবান্ন
এই কেন্দ্রীয় দলে চারজন বিজেপি সাংসদ রয়েছেন। যাঁরা ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে খোঁজখবর করতে আসবেন। সেই রিপোর্ট দেওয়া হবে এনডিএ সরকারকে। তারপর রাজ্যের উপর চাপ বাড়ানো হবে বলে সূত্রের খবর। ধর্মেন্দ্র প্রধান থেকে বিপ্লব দেব এই প্রতিনিধিদলে আছেন। এমন আবহে রাজ্যের পরিষদীয় দফতর থেকে এই চিঠি না যাওয়ায় রাজভবনও বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব না দিতে পারে। তাহলে সংঘাত চরমে পৌঁছবে। শপথের বিষয়ে রাজ্যপালের অনুমতি চাওয়ার চিঠি পরিষদীয় দফতর দিয়ে থাকে। এবার সেই চিঠি যায়নি বলেই সূত্রের খবর।
বেশ কিছুদিন আগে দেখা গিয়েছিল, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিজে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন ধূপগুড়ির নির্মলচন্দ্র রায়কে। তাও আবার রাজভবনে। সেটা বিধানসভার ইতিহাসে নজির গড়েছিল। কারণ বিধায়কদের শপথগ্রহণ করানোর জন্য বিধানসভার স্পিকারকে দায়িত্ব দিয়ে থাকেন রাজ্যপাল। সেবার তা ঘটেনি। মন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করিয়ে থাকেন রাজ্যপাল। তবে ব্যতিক্রম ঘটনা হয়েছিল বিধায়ক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথের সময়ে। বিধানসভায় গিয়ে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন জগদীপ ধনখড়। যা নজিরবিহীন বলে অনেকে মনে করেন।