বর্তমানে বাংলা হল শিশু শ্রমিক শূন্য অর্থাৎ রাজ্যে বর্তমানে একটিও শিশু শ্রমিক নেই। বিধানসভায় শিশু শ্রমিক নিয়ে একটি প্রশ্নের উত্তরে এমনটাই দাবি করেছেন রাজ্যের শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক। গত পাঁচ বছরের তথ্য দিয়ে তিনি জানান, ২০২৪ সালে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে একটিও শিশু শ্রমিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। যদিও শ্রম মন্ত্রীর দেওয়া এই তথ্য মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, তথ্যে গরমিল রয়েছে।
আরও পড়ুন: স্কুলের গাড়িতে করে মদ তৈরির কারখানায় নিয়ে যাওয়া হত শিশু শ্রমিকদের,অবশেষে উদ্ধার
রাজ্যে শিশু শ্রমিক সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলেন বিজেপি বিধায়ক মধুসূদন বাগ। সেই প্রশ্নের জবাবে গত পাঁচ বছর রাজ্যে শিশু শ্রমিকের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। সেই তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলায় শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ১৪ জন। এরপর থেকেই তা কমতে থাকে। ২০২১ সালে ৬, ২০২২ সালের ৩ এবং ২০২৩ সালে ১ জন শিশু শ্রমিক ছিল বাংলায়। আর চলতি বছরে নভেম্বর পর্যন্ত এখনও পর্যন্ত বাংলায় কোনও শিশু শ্রমিকের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান। মলয় ঘটকের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে বাংলা থেকে এই কুপ্রথার বিলোপ ঘটানো সম্ভব হয়েছে।
তিনি জানান, শিশুশ্রম নিরসনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। সেই প্রকল্পের কারণে আর্থসামাজিক পরিস্থিতির অগ্রগতি হয়েছে এবং বাংলাকে শিশুশ্রমিক শূন্য করা সম্ভব হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, যুবশ্রীর মতো বিভিন্ন প্রকল্পের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি, চলতি বছরে রাজ্যে শিশুশ্রমিক সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি বলেও জানান মন্ত্রী। মলয়ের বক্তব্য, একজন শিশুকেও এবছর উদ্ধার করা হয়নি।
তবে বিজেপির অভিযোগ, এই তথ্য সঠিক নয়। নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতেই এই তথ্য শ্রম দফতরে রাখা হয় না। তবে মন্ত্রী জানাচ্ছেন, শিশু শ্রমিক বন্ধে লাগাতার প্রচার এবং নজরদারি চালানো হয়। প্রসঙ্গত, রাজ্যের এই তথ্য সঠিক কিনা তা অবশ্য জানা সম্ভব নয়। কারণ কেন্দ্র সরকার দেশব্যাপী জনগণনা করেছে ২০১১ সালে।
ফলে বর্তমানে এনিয়ে কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই। এছাড়া, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো রাজ্য সরকারের কাছে তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন সংস্থা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সংগ্রহ করে। উল্লেখ্য, শ্রম দফতরের তরফে রাজ্যজুড়ে সমীক্ষা করে দেখা হয়, ১৪ বছরের নীচে ছেলে-মেয়েদের কোথাও কাজে লাগানো হচ্ছে কি না। যদিও মন্ত্রীর বক্তব্য, পারিবারিক ব্যবসা, যাত্রা, থিয়েটারে ১৪ বছরের নীচের কেউ কাজ করলে সেটাকে অপরাধ হিসেবে ধরা হয় না।