প্রথমে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতা বিমানবন্দরে আটকায় অভিবাসন দফতর। তারপর তাঁকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তলব করল। আগামী ৮ জুন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করা হয়েছে। ঠিক তার পরেই কয়লা পাচার মামলায় রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটককে হাজিরার নোটিশ পাঠাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আগামী ১৯ জুন নয়াদিল্লির ইডি সদর দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে আইনমন্ত্রীকে। এই পর পর তলব নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। হঠাৎ এমন তলবে অভিসন্ধি দেখতে পাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব।
দেশজুড়ে যখন করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে তখন এই পর পর তলব ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতেই বলে মনে করছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। এই কয়লা পাচার মামলা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। এর আগে কয়লা পাচার মামলার তদন্তে সিবিআই বিরাট অভিযান চালিয়েছিল। তাঁরা রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটকের আসানসোলের বাড়ি এবং পৈতৃক বাড়িতে হানা দিয়েছিলেন। কিন্তু খালি হাতেই ফিরতে হয় তদন্তকারীদের। তারপরও নানা সময় তলব করা হয়েছিল। যাতে সাড়া দেননি মলয় ঘটক। এমনকী রাজভবনের মন্ত্রী কোয়ার্টারের যে তলায় মলয় ঘটক থাকেন সেখানেও হানা দিয়েছিল সিবিআই। এবার তাঁকে নয়াদিল্লিতে তলব করল ইডি।
এদিকে ইডি সূত্রে খবর, মলয় ঘটককে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আগে সুপ্রিম কোর্ট তদন্তকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছিল, রাজ্যের আইনমন্ত্রীকে তলব করার অন্তত ১৫ দিন আগে নোটিশ পাঠাতে হবে। এখন দেখা যাচ্ছে, সেই মতোই হাতে সময় নিয়েই তাঁকে ডাকা হয়েছে। তবে ইডি’র পক্ষ থেকে দু’টি ই–মেল পাঠানোর পর মলয় ঘটক তাঁদের জানান, ১৯ জুন থেকে যে সপ্তাহটি শুরু হচ্ছে সেই সপ্তাহে তাঁর হাজিরা দিতে কোনও অসুবিধা নেই। তারপরই মলয় ঘটককে ১৯ জুনই নয়াদিল্লিতে ডেকে পাঠানো হল বলে সূত্রের খবর।
আর কী জানা যাচ্ছে? অন্যদিকে রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হলেও মলয় ঘটককে নয়াদিল্লিতে তলব করা হয়েছে। একই মামলার তদন্তে ভিন্ন স্থান হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কেন কলকাতায় ডাকা হল না রাজ্যের আইনমন্ত্রীকে? নয়াদিল্লিতে নিয়ে গিয়ে তদন্ত করার কারণ কী? উঠছে প্রশ্ন। যদিও এই বিষয়ে কোনও কথা বলেননি ইডির অফিসাররা। তাছাড়া গত সপ্তাহে ইডি’র ডিরেক্টর সঞ্জয় মিশ্র কলকাতায় এসেছেন। এখানকার অফিসারদের সঙ্গে গোল টেবিল বৈঠক করেছেন। ঠিক তার পরই এমন পরপর নোটিশ পাঠানো বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।