বর্ষা এলেও দেখা নেই বৃষ্টি। আষাঢ়ের শেষেও ধান রুইতে আকাশের দিকে তাকিয়ে চাষিরা। বর্ষার শুরুতেই কার্যত খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়। নিম্নচাপে ভর করে দক্ষিণবঙ্গে আগামী কয়েকদিন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও তাতে ঘাটতি মিটবে কি? প্রশ্ন উঠছে, বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পরিমানে চোখ রাখলেই।
একদিকে যখন প্রবল বর্ষণে বন্যাপরিস্থিতি দেশের পশ্চিমের বিভিন্ন রাজ্যে তখন পশ্চিমবঙ্গে ভরা বর্ষায় শরতের আমেজ। আকাছে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। সঙ্গে মাঝে সাঝে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। যার জেরে ধান রোপনের পরিমান ব্যাপক হারে হ্রাস পেয়েছে। যার প্রভাব পড়তে পারে এবারের ফলনে।
হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, গত ১ জুন থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টিপাতে ঘাটতির পরিমান প্রায় ৪৭ শতাংশ। এই সময়ের মধ্যে রাজ্যে গড়ে ৩৭৫ মিমি বৃষ্টি হয়। সেখানে এবার বৃষ্টি হয়েছে ১৯৯ মিমি।
সব চেয়ে করুণ অবস্থা মুর্শিদাবাদ জেলার। কৃষিনির্ভর এই জেলায় বৃষ্টিপাতে ঘাটতির পরিমান ৬৮ শতাংশ। তার পরেই রয়েছে পড়শি জেলা বীরভূম। সেখানে ঘাটতি ৬৬ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে আরেক কৃষিনির্ভর জেলা নদিয়া। সেখানে ঘাটতি ৬১ শতাংশ।
চতুর্থ স্থানে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। বৃষ্টিপাতে ঘাটতির পরিমান ৫২ শতাংশ। উত্তর ২৪ পরগনায় ৪৮ শতাংশ। কলকাতায় ঘাটতি ৪৯ শতাংশ। বাঁকুড়ায় ৪৫ শতাংশ। ধানের গোলা বর্ধমানে বৃষ্টিপাতে ঘাটতির পরিমান ৪৩ শতাংশ। হাওড়ায় ৪১ শতাংশ। পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪০ শতাংশ। হুগলিতে ৩৪ শতাংশ ও পূর্ব মেদিনীপুরে ৩২ শতাংশ।
উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলাতেও বৃষ্টিপাতের ব্যাপক ঘাটতি তৈরি হয়েছে। তার মধ্যে মালদায় ঘাটতির পরিমান ৭১ শতাংশ। দক্ষিণ দিনাজপুরে ৫৪ শতাংশ। উত্তর দিনাজপুরে ৩২ শতাংশ। ওদিকে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলায় অতিবৃষ্টি হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের পরিমান যথাক্রমে ২৯ ও ৩৭ শতাংশ। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও উত্তর প্রদেশেও বৃষ্টিপাতের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে।