আবার কলকাতা শহরের বুকে ভরসন্ধ্যায় ডাকাতির ঘটনা ঘটল। আর এই নিয়ে তৃতীয় বার কলকাতায় ডাকাতির ঘটনা ঘটল। ভরসন্ধ্যায় শহরে ডাকাতি হওয়ায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। পুলিশ সূত্রে খবর, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ টালিগঞ্জের ম্যুর অ্যাভিনিউ এলাকায় এক মহিলাকে মারধর করে মুখে কাপড় বেঁধে সোনাদানা লুট করা হয়। তারপর সেখান থেকে চম্পট দেয় ডাকাত দল। বড়তলা, দমদমের পর দক্ষিণ কলকাতার ম্যুর অ্যাভিনিউ তৃতীয় ডাকাতির ঘটনা খাস কলকাতায়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই যথেষ্ট চাপ বেড়েছে কলকাতা পুলিশের উপর।
একই কায়দায় বাড়িতে ঢুকে ডাকাতি হয়ে যাচ্ছে। আর সেটা কোনওভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, খোদ কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। প্রায় ৪ লক্ষ টাকা সোনার গয়না লুট করা হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে খবর। এখন কলকাতা পুলিশ ওই পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিসিটিভি ফুটেজ দেখছে। আর তদন্ত শুরু করেছে রিজেন্ট পার্ক থানার পুলিশ। এই ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় কেউ জড়িত কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সল্টলেকের বাড়িতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু ব্যক্তির, ঘটনাস্থলে দমকল মন্ত্রী
পুলিশ সূত্রে খবর, আক্রান্ত মহিলার বয়স ৫০। ডাকাতির সময় তিনি বাড়িতে একা ছিলেন। কদিন পরই তাঁর ছেলের বিয়ে। ছেলের বিয়ের জন্যই প্রায় ১০ লক্ষ টাকার সোনার গয়না কিনে বাড়িতে রেখেছিলেন। আর সেই খবর জানতে কেউ বা কারা পেরেই এই ডাকাতির ছক করা হয়। বাড়িতে যখন হানা দিল ডাকাতদল তখন ছেলে বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে ডাকাতি করা হয়। ডাকাতরা সংখ্যায় কতজন ছিল সেটা এখনও সামনে আসেনি। তবে তাদের প্রত্যেকেরই মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। তাই বাড়ির গৃহকর্ত্রী তাদের চিনতে পারেননি। রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ডাকাতদের ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এছাড়া ওই মাঝবয়সী মহিলার নাম সোনালি দেবী বলে জানা যাচ্ছে। মহিলার পরিচিত কেউ এই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। কদিন আগে এক আত্মীয় তাঁর মেয়ের বিয়ের জন্য সোনালী দেবীর কাছে লক্ষাধিক টাকা ধার চেয়েছিলেন। উনি সেই টাকা ধার দেননি। তারই প্রতিহিংসায় ওই আত্মীয় বাড়িতে ডাকাত ঢুকিয়ে লুট করিয়েছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই মহিলা পুলিশকে জানান, কলিং বেল বাজতেই তিনি দরজা খোলেন। আর তখনই ডাকাতরা ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়ে তাঁকে পিছন থেকে ধাক্কা মারে। তাতে তিনি মেঝেতে পড়ে যান। সেই সুযোগে কজন মিলে তাঁর হাত ও মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়। ডাকাতরা চলে যাওয়ার পর তিনি মাটিতে পড়ে ছিলেন। সেটা এক প্রতিবেশী দেখতে পেয়ে রিজেন্ট পার্ক থানায় খবর দেন। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) রূপেশ কুমার জানান, ডাকাতদের ‘মোডাস অপারেন্ডি’ দেখে মনে হচ্ছে দমদম, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ এবং এই ঘটনা একই ডাকাত দলের কাজ। আর সেটা পরিকল্পনা করেই।