ভূগর্ভস্থ জলস্তর লাগাতার কমছে। কলকাতায় ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমতে কমতে বিপদ সীমার পৌঁছনোর ফলে গভীর নলকূপ নিষিদ্ধ করেছে কলকাতা পুরসভা। তবে খাতায় কলমে নিষিদ্ধ করা হলেও এখনও দেখা যাচ্ছে কলকাতার একাধিক এলাকার মানুষজনকে জলের জন্য গভীর নলকূপের উপরই ভরসা রাখতে হয়। যারফলে বিপদের আঁচ পাচ্ছেন ভূতত্ত্ববিদরা। এই অবস্থায় গত তিন বছরে কলকাতার বুস্টার পাম্পিং স্টেশন বসানো হলেও দেখা যাচ্ছে এখনও পর্যন্ত হাজার খানেক গভীর নলকূপ রয়ে গিয়েছে। মূলত যে সমস্ত এলাকায় বুস্টার পাম্পিং স্টেশনের কাজ বাকি সেখানে গভীর নলকূপের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে। ফলে এখনও গভীর নলকূপমুক্ত করা যায়নি শহরকে।
আরও পড়ুন: প্রথম মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে টিউবওয়েল চুরি! বন্দরশহর জুড়ে আলোড়ন পড়েছে
পরিবেশকর্মী এবং ভূমি বিশেষজ্ঞরা একাধিক বার কলকাতায় মাটির নীচের জলস্তর কমে যাওয়া নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে গভীর নলকূপের ব্যবহার কমানো না হলে চরম জলের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। এদিকে, মাটির নিচে জলস্তর ক্রমশ কমায় দক্ষিণের বেশ কিছু এলাকায় গভীর নলকূপগুলির জায়গা পরিবর্তন করতে হয়েছে । আর এই সমস্ত কারণে বিপদ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। একসময় অনেক পুকুর ছিল যেটা মাটির নিচের জল যাওয়ার মুখ হিসেবে কাজ করত। এখন আর সেই সব পুকুর নেই। সব ভরাট হয়ে গিয়েছে, উঠেছে বহুতল। এখন মাটি শুকিয়ে যাওয়ার ফলে আশপাশের অঞ্চল থেকে জল টেনে আনে দ্রুত । আর এর ফলে আর্সেনিক সংক্রমণের প্রভাবও বাড়ছে।
পুরসভার মাসিক অধিবেশনে এ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন এক তৃণমূল কাউন্সিলর। তার জবাবেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, এখনও পর্যন্ত হাজারখানেক ডিপ টিউবওয়েল রয়েছে শহরে। অনেক ক্ষেত্রেই পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে পরিশোধিত জলের সঙ্গে ডিপ টিউবওয়েলের জল মিশিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়ে থাকে।জলসরবরাহ বিভাগের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, পরিশোধিত পানীয় জলের সরবরাহ বাড়াতে হবে। তবেই গভীর নলকূপের উপরে নির্ভরশীলতা কমানো যাবে। এছাড়া কোনওভাবেই তা সম্ভব নয়। যদিও ইএম বাইপাস সংলগ্ন কিছু এলাকা এবং পুরসভার সংযোজিত এলাকার অনেক আবাসনে বোরিং সিস্টেম রয়েছে। সেখানে মাটির নিচ থেকে জল তোলা হয়। তবে সেই জল খাওয়ার অযোগ্য। জলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে। তাতে ঘরের মেঝে পর্যন্ত লালচে হয়ে যায়। পুরসভার আধিকারিকরা জানান, পরিশোধিত পানীয় জলের সরবরাহ আরও বাড়লে কলকাতার কোথাও আর সমস্যা হবে না।