বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের নির্মম হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন আখতারুজ্জামান শাহীনের আমেরিকা পালানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হারুন-অর-রশিদ। তিনি জানিয়েছেন, তদন্তের অগ্রগতি ও অপরাধীকে গ্রেফতারের জন্য ইন্টারপোল এবং পশ্চিমবঙ্গের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) সঙ্গে সহযোগিতা বজায় রাখা হবে।
রবিবার কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হারুন-অর-রশিদ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দণ্ডবিধিতে একটি ধারা আছে, এক্সট্রা টেরিটোরিয়াল অফেন্স, যা অনুযায়ী যদি কোনো ব্যক্তি বাংলাদেশের বাইরে অপরাধ করে, আমরা সেই অপরাধগুলি তদন্ত করতে পারি।’ তাঁরা মনে করছেন, শাহীন কাঠমান্ডু থেকে দুবাই হয়ে আমেরিকা পালিয়েছে।
আরও পড়ুন। ছক ছিল মুক্তিপণ আদায়ের! কেন পাল্টে গেল প্ল্যান? আনোয়ারুল খুনে ভারতে এবার বাংলাদেশের গোয়েন্দা টিম
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন আমাদের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং তার শরীর টুকরো টুকরো করা হয়েছে। এই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী, সুবিধাভোগী এবং যারা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে তারা সবাই বাংলাদেশি। হত্যা পরিকল্পনা বাংলাদেশেই করা হয়েছিল। এখন আমাদের প্রধান কাজ হলো তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।’
হারুন-অর-রশিদ উল্লেখ করেন, অপরাধস্থল পরিদর্শন এবং সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরি। এসময় একটি বাংলাদেশি গোয়েন্দা দলকে ভারতে পাঠানো হয়েছে এই মামলার ব্যাপারে আরও তদন্ত করার জন্য।
এদিকে, সিআইডি আনারের দেহাবশেষ উদ্ধার করতে একটি অনুসন্ধান অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এক সন্দেহভাজন, মুম্বইয়ের এক কসাই, জিহাদ (ছদ্মনাম সিয়াম), স্বীকার করেছেন যে তিনি আখতারুজ্জামানের নির্দেশে এমপি আনারের শরীর টুকরো টুকরো করেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ‘আসামিরা মুম্বাইয়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী কসাই জিহাদকে নিয়ে আসে। দুই মাস আগে, তাকে এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক আখতারুজ্জামান শাহীন কলকাতায় নিয়ে আসে। এই শাহীনই এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা।’
আরও পড়ুন। বাংলাদেশের সাংসদ খুনে মুখ খুললেন সুন্দরী শিলাস্তি, মডেল হতে গিয়ে অন্ধকার গলিতে…
আখতারুজ্জামান শাহীন, যিনি এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন, আনারের হত্যার পরিকল্পনা চারজন বাংলাদেশি নাগরিকের সহায়তায় বাস্তবায়ন করেছিলেন। বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগ আশা করছে শীঘ্রই আখতারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করতে এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হবে।