গত ২৫ জুলাই নয়াদিল্লি গিয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন বাদল অধিবেশন চলছিল সংসদে। তাই সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ থেকে দলবদলু বিজেপি নেতা সুনীল মণ্ডল। রাতের অন্ধকারে মুখ ঢেকে মুকুল রায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়ে বিশেষ লাভ হয়নি সুনীলের। সূত্রের খবর, মুকুল রায় তাঁকে জানিয়ে দেন এখানে আমার কিছু করার নেই। খুব বেশি হলে আমি বিষয়টা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে রাখতে পারি। বাকিটা নিজেকে গিয়েই জানাতে হবে। এরপর সেখান থেকে চলে যান সুনীল মণ্ডল।
তারপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়াদিল্লি থেকে ফেরার সময় বিমানবন্দরে নেত্রীকে প্রণাম করেন সাংসদ সুনীল মণ্ডল বলে জানাচ্ছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা। আর তাতেই শাপমুক্তি ঘটল বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডলের। একুশের নির্বাচনের আগেই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে মেদিনীপুরের সভায় অমিত শায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সুনীল মণ্ডল। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতেই তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার রাস্তা খুঁজছিলেন তিনি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘মুকুল রায়ের পরামর্শেই যেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নয়াদিল্লি থেকে কলকাতা ফিরে আসেন, সেদিন একই বিমানে টিকিট কাটেন সুনীল মণ্ডল। তারপর বিমানবন্দরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢুকতেই তাঁর পা ছুঁয়ে ক্ষমা চান সুনীল। দিদিকে প্রণাম করে ক্ষমা চান সুনীল মণ্ডল। বলেন, ভুল হয়ে গিয়েছে। এবারের মতো আমাকে ক্ষমা করে দিন।’
জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে কিছু না বললেও তার প্রমাণ মিলল সোমবার সংসদে। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদদের মোদী বিরোধী বিক্ষোভে সুনীল মণ্ডল অংশ নেন। তাতে অস্বস্তি বাড়ে বিজেপি শিবিরের। তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা যখন ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তখন তাতে সামিল হন সুনীল মণ্ডলও। পরে প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানান, ‘আমি তো বিজেপি যাইনি, তৃণমূল কংগ্রেসেই ছিলাম। তৃণমূল কংগ্রেসেই আছি। তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গেই কাজ করছি।’ সূত্রের খবর, তৃণমূলনেত্রীর নির্দেশেই সুনীল মণ্ডলকে তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দলে থাকার সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।