গেরুয়া সংস্রব ত্যাগ করেছেন। কিন্তু বিধায়ক পদ ত্যাগ করবেন কি মুকুল রায়? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্য–রাজনীতির অলিন্দে। এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব নেবেন বলে জানিয়েছেন মুকুল। শুক্রবার মুকুল রায় সপুত্র তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু এখনও বিধায়ক পদ ছাড়েননি তিনি। তার জেরেই আলোচনা তুঙ্গে উঠেছে। বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর বিধানসভা আসনে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসের কৌশানী মুখোপাধ্যায়কে পরাজিত করেন।
সূত্রের খবর, বিজেপি ছাড়লেও সম্ভবত এখনই বিধায়ক পদ ছাড়ছেন না মুকুল রায়। বিজেপি বিধায়ক হিসেবেই সম্ভবত ২ জুলাই বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দেবেন তিনি। তারপর যদি তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব বিধায়ক পদ ছাড়তে বলে তবেই তিনি ছাড়বেন। কিন্তু এখন প্রশ্ন, মুকুল রায় বিধায়ক পদ ছাড়বেন কি না? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে দল সিদ্ধান্ত নেবে।’ যদিও তৃণমূল কংগ্রেস এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এদিকে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরতেই তাঁর উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কয়েক মাসের মধ্যে রাজ্যে দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। যদিও শুভেন্দুর অস্ত্রেই তাঁকে বিঁধেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁর পালটা কটাক্ষ, আগে তাঁর বাবা শিশির অধিকারীকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ পদ ছাড়ার পরামর্শ দিক শুভেন্দু অধিকারী। এই পরিস্থিতিতে আজ রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে বিধাযকদের নিয়ে বৈঠক করতে যাচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানে মূখ্য অ্যাজেন্ডা এটাই বলে সূত্রের খবর।
অন্যদিকে মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরে বিজেপির একাধিক নেতা ও বিধায়ক বেসুরো গাইতে শুরু করেছেন। আগামী দিনে বিজেপির আরও বিধায়কের শিবির বদলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছেন না পদ্মশিবিরের নেতারা। এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘দলত্যাগ আইন কীভাবে কার্যকর করতে হয় আমি জানি।’ তাই রাজ্যপালের সঙ্গে এই বৈঠক করে বিধায়কদের আটকানোর কৌশল তৈরি করা হবে বলে খবর।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন মুকুল রায়। তখন একে একে তৃণমূল কংগ্রেসের সমস্ত পদ ছেড়েছিলেন মুকুল রায়। এমনকী ছাড়েন রাজ্যসভার সাংসদের পদও। তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও চিহ্ন নিয়েই বিজেপিতে যোগ দেননি তিনি। সূত্রের খবর, এবার হয়ত ছবিটা অন্যরকম হতে পারে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে তিনবার চিঠি দিয়েছেন। তিনি ওম বিড়লাকে ফোন করে শিশির ও সুনীলের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে পদক্ষেপ গ্রহণের আর্জি জানান।