নির্বাচনে তিনি জয়ী হয়েছেন। বিধায়ক হিসাবে শপথও নিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন। আর তা হল দুর্নীতিতে জড়িয়ে থাকার তথ্য। এই অভিযোগে এখন তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য–রাজনীতি। হ্যাঁ, তিনি বিজেপির সর্বভারতীয় সহ–সভাপতি তথা কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুল রায়। আর এই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে নির্বাচনী হলফনামায় মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছে তৃণমূল কংগ্রেস। অভিযোগ, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগে প্রার্থীকে যে হলফনামা জমা দিতে হয়, সেখানে নারদ মামলার তথ্য তিনি গোপন করেছেন।
এখন এই মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুই মন্ত্রী এবং এক বিধায়ককে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। আজ তাঁদের গৃহবন্দি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগে মামলা চললে সেটা হলফনামায় জানাতে হয়। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুকুলের জমা দেওয়া হলফনামায় নারদের উল্লেখ নেই। কুণালের এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতিতে।
এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, এই বিষয়ে তাঁরা স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কিছু করতে পারেন না। অভিযোগ দায়ের হলে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দফতর সূত্রে খবর, মুকুলবাবু যে হলফনামা জমা দিয়েছেন তা যাচাই করেছেন রিটার্নিং অফিসার। সেই তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। এই বিষয়ে অভিযোগ পেলে নির্বাচন কমিশন তাদের আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারে।
কোনও প্রার্থীর নামে যদি এফআইআর থাকে, আর সেই তথ্য যদি প্রার্থী হলফনামায় না উল্লেখ করেন, তা হলে তথ্য গোপন করা হয়েছে বলেই ধরে নেওয়া হবে। সেটা আইনের চোখে অপরাধ। কেউ এই নিয়ে অভিযোগ করলে মামলা হবে বলে আইনজীবীদের মত। আর এই অভিযোগ যদি সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে প্রার্থীপদই খারিজ হতে পারে। এই অভিযোগ সরাসরি কমিশনের কাছেও করা যেতে পারে। আবার আদালতে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে মামলা করে তাতে নির্বাচন কমিশনকে যুক্ত করা যেতে পারে।
এখানেই শেষ নয়, কুণাল ঘোষের দাবি, শুভেন্দু অধিকারীও নারদ মামলার নাম উল্লেখ করেননি। তবে তিনি কত নম্বর ধারায় মামলা চলছে তার উল্লেখ করেছেন। কিন্তু মুকুল সেটাও করেননি। মামলায় অব্যাহতি পেতেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মুকুল রায়। বিজেপি নিশ্চয়ই মুকুলকে আশ্বাস দিয়েছে। অথচ ববি হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্রও তাঁর হলফনামায় নারদের কথা উল্লেখ করেছেন।