কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ২০১০ সালের পর থেকে তৈরি হওয়া ওবিসির তালিকা বাতিল হয়ে গিয়েছে। এদিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে যে সময় ওই ওবিসি তালিকা তৈরি হয়েছিল সেই সময় ঘটনাচক্রে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণমন্ত্রী ছিলেন উপেন বিশ্বাস। ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার এক বছর পরেই পাশ করা হয়েছিল ওই ওবিসি সংক্রান্ত বিল। এবার তা নিয়ে টিভি ৯ সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। মূলত কেন মুসলিমদের ওই তালিকায় রাখা হয়েছিল তার ব্যাখা তিনি দেন।
প্রসঙ্গত একাধিক ক্ষেত্রে বর্তমানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নানা মন্তব্য করেন উপেন বিশ্বাস। নিয়োগ দুর্নীতির বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন তিনি। আর সেই উপেন বিশ্বাস যখন মন্ত্রী ছিলেন তখনই পাশ হয়েছিল এই বিল। তা নিয়ে এখন কী ব্যাখা দিচ্ছেন উপেন বিশ্বাস?
ওই সংবাদমাধ্যমে উপেন বিশ্বাস জানিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকার গঠনের পর ওবিসি নিয়ে আইন তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি খুব তাড়াও দিচ্ছিলেন। সেই সময় মুখ্যসচিবকে বলে একটু সময়ও চেয়ে নিয়েছিলেন তিনি।
উপেন বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রথমে আইন বিভাগে, তারপর সংবিধান বিভাগে তারপর মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে সম্মতি মেলার পরে দফতরে কাগজ ফিরে আসে। এরপর বিধানসভায় বিল পেশ করা হয়। বিল পাশও হয়ে যায়। তারপর তৈরি হয় আইন।
পুরনো একাধিক কথা উত্থাপন করেছেন উপেন। তিনি জানিয়েছেন, সংবিধানে জাতির ভিত্তিতে সংরক্ষণ দেওয়ার কথা বলা হয়নি। কিন্তু সিপিএম সেই কাজটাই করেছিল। তাহলে তৃণমূল আমলেও কেন মুসলিমদের এই শ্রেণিভুক্ত রাখা হল?
এনিয়ে উপেন বিশ্বাস জানিয়েছেন, ইসলামের মধ্য়েও অনগ্রসর শ্রেণি আছে। এটা সমীক্ষা করতে গিয়ে দেখা গিয়েছিল। তিনি জানিয়েছেন, মুসলিমরা কোনও কাস্টে বিশ্বাস করেন না। কিন্তু বিয়ের সময় আবার সেই কাস্ট মানা হয়ে থাকে। তাদের মধ্যেও অনগ্রসর শ্রেণি আছে।
বাম আমলের প্রসঙ্গ টেনে উপেন বিশ্বাস বলেন, বুদ্ধবাবু( বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য) কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। কয়েকজন অফিসারকে কর্ণাটকে পাঠিয়েছিলেন। তারপর তালিকা তৈরি করেছিলেন। সেই সঙ্গেই তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে এসসি, এসটির পরে অনগ্রসর হল মুসলিমরা। এসসি-এসটি বাদ দিয়ে সবথেকে ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস হিসাবে থাকেন মুসলিমরা।
এদিকে তৃণমূলও কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের তীব্র সমালোচনা করছেন। আর খোলা মঞ্চ থেকেও তাঁরা এনিয়ে নানা কথা বলছেন। তবে অন্তত এই একটি ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকারের সঙ্গে একমত উপেন বিশ্বাস।