তাঁর মেয়ে ‘দুর্নীতির বলি’ হয়েছেন। সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হতেই এমনই মন্তব্য করলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের (স্নাতকোত্তরের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া) বাবা। সোমবার সন্ধ্যায় দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে সন্দীপের গ্রেফতারির পরে সংবাদমাধ্যম এবিপি আনন্দে তিনি বলেন, ‘সন্দীপ ঘোষের ফাঁসি হোক। আরও অনেকে জড়িত আছেন। আরও সামনে আসুক। আমার মেয়ে তো দুর্নীতিরই বলি হয়েছে। যা হয়েছে, ভালো হয়েছে। এখনও খুশি হওয়ার মতো সেরকম কিছু হয়নি।’
‘ঘুঘুর বাসা’ চালাতেন সন্দীপ, উঠেছিল অভিযোগ
গত ৯ অগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতাল থেকে তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। অভিযোগ ওঠে যে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ‘ঘুঘুর বাসা’ চালাতেন সন্দীপ। সেই পরিস্থিতিতে প্রবল চাপের মুখে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন।
যদিও কয়েক ঘণ্টা পরেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদ পেয়ে গিয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের হুঁশিয়ারিতে ছুটিতে যেতে বাধ্য হন সন্দীপ। পরবর্তীতে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের চাপে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের পদ থেকে সন্দীপকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তবে তাঁকে স্বাস্থ্যভবনের তরফে এখনও সাসপেন্ড করা হয়নি বলে দাবি করেছেন জুনিয়র ডাক্তার।
অভিযান, জিজ্ঞাসাবাদ, গ্রেফতার
তারইমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। তারপর গত ২৫ অগস্ট সন্দীপের বাড়িতে অভিযান চালায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেদিনও সন্দীপকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরবর্তীতেও সিজিও কমপ্লেক্সে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে সিবিআই।
তারপর সোমবার দুর্নীতি মামলায় সন্দীপকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় আপাতত গ্রেফতারির সংখ্যা একেই থাকল। সিভিক ভলান্টিয়ারকে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধর্ষণ এবং খুনের মামলার তদন্তভার পাওয়ার পরে দু'সপ্তাহ কেটে গেলেও এখনও নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করেনি সিবিআই।
সন্দীপের গ্রেফতারি নিয়ে কুণাল
তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারি নিয়ে যাঁরা প্রতিক্রিয়া চাইছেন, (তাঁদের বলছি যে) তদন্ত CBI করছে। সম্ভবত দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতার করেছে। এ বিষয়টা সন্দীপ বা তাঁর আইনজীবীরা বলতে পারবেন। দলের কোনও বক্তব্য নেই। কিছু অভিযোগ অনেক আগেই শোনা গিয়েছিল। তখন পদক্ষেপ নিলে এখনকার অস্বস্তি এড়াতে পারত স্বাস্থ্যভবন।’