কলকাতার ট্যাংরায় বাড়ি থেকে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার ও বাইপাসের দুর্ঘটনাকে ঘিরে পরতে পরতে রহস্য। বাড়িতে পড়েছিল তিনটি দেহ। বাইপাসে দুর্ঘটনা হল সেই পরিবারের গাড়ির। সেই গাড়িতে ছিলেন দুই ভাই ও এক কিশোর। তারা আহত। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে।
১২টা ৫৩ মিনিটে ট্যাংরার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল গাড়ি। কবি সুকান্ত মেট্রো স্টেশনের কাছে অভিষিক্তা মোড়ে পিলারে সেই গাড়ি ধাক্কা দিল ৩টে ৩১ মিনিটে। মাঝের সময়টা কোথায় ছিল ওই গাড়ি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে নিউটাউন, কলকাতা সহ একাধিক রাস্তায় গাড়ি নিয়ে ঘুরছিলেন তারা। লরির পেছনে ধাক্কা দিয়ে নাকি আত্মহত্যা করার ইচ্ছা ছিল তাঁদের। কিন্তু সেটা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। এরপরই পিলারে ধাক্কা। তবে সবটাই যাচাই করছে পুলিশ।
তবে পুলিশ ইতিমধ্য়েই জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের বয়ান কতটা বিশ্বাসযোগ্য রয়েছে সেটা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। কারণ একাধিক মিসিং লিঙ্ক রয়েছে। সেটা মেলানোর চেষ্টা করছে।
সূত্রের খবর, গাড়িতে থাকা বড় ভাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে একাধিক বক্তব্য বলেছিলেন, তাতে একাধিক অসংগতি রয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে আসার পরে তিনি বলেছিলেন ভাই তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেকারণেই ধাক্কা। এরপর আবার বয়ান কিছুটা বদলে ফেলেছিলেন তিনি। তাদের কাছ থেকেই পুলিশ ট্যাংরার বাড়ির ঘটনার কথা জানতে পারেন। এরপরই দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।
সূত্রের খবর, পায়েসের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে আগের রাতে খেয়েছিলেন তারা। এতেই নাকি তন্দ্রাছন্ন হয়ে যাচ্ছিলেন। এমনকী ছাদেও উঠেছিলেন। এরপর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন তারা।
প্রতিবেশীদের দাবি, অত্য়ন্ত ভদ্র পরিবার হিসাবেই পরিচিত এই পরিবার। বিশেষ ঝুটঝামেলায় থাকতেন না।
তবে সূত্রের খবর, ইদানিং প্রচুর ধার হয়ে গিয়েছিল তাদের। তাদের চামড়ার সুরক্ষামূলক গ্লাভসের ব্যবসা রয়েছে। তবে সেটাও ক্ষতির মুখে পড়েছিল। এমনকী রাশিয়াতেও তারা তাদের গ্লাভস সরবরাহ করতেন বলে খবর। কিন্তু যুদ্ধের জন্য সেটাও ক্ষতির মুখে পড়ে। বাজারে প্রচুর দেনা, বার বার তাগাদা দিতেন পাওনাদাররা। তার জেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল গোটা পরিবার। তাদের কারখানার এক কর্মী বলেন, পুজোর পর থেকে ব্যবসাতে কিছুটা ঘাটতি হচ্ছিল। বাইরে সাপ্লাই দিতেন মালপত্র। সেখান থেকেও ইদানিং কিছু পেমেন্ট আটকে গিয়েছিল।