একের পর এক প্রকল্পের টাকা দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। যার জন্য রাজ্য সরকারকে তা বহন করতে হয়েছে। সেটা ১০০ দিনের কাজের প্রাপ্য থেকে শুরু করে আবাস যোজনার টাকা। কোনও টাকাই দিচ্ছে না এনডিএ সরকার। অর্থ কমিশনের প্রতিনিধিদের সামনে এই ভাষাতেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, মঙ্গলবার নবান্নে কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি বাংলার রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা হয় এই বিষয়টি নিয়ে। সেখানেই কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে সরব হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বারবার চিঠি লেখা হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীকে। নয়াদিল্লি গিয়ে দেখা পর্যন্ত করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। ১০০ দিনের কাজের সঙ্গে যুক্তদের চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয় নয়াদিল্লিতে। তাও বকেয়া তিন বছরের টাকা আসেনি। সেটা দিতে হয় রাজ্য সরকারকে। আবাস যোজনার টাকা এই মাসের মধ্যে দেবে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য মিশনের টাকা, সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা, জলজীবন মিশনের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এভাবেই বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার কথা তুলে ধরেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘জিএসটি বাবদ রাজ্য থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব কর নিয়ে গেলেও বাংলার প্রাপ্য অর্থ দেয় না নয়াদিল্লি।’ ষোড়শ অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানগড়িয়ার নেতৃত্বে আসা প্রতিনিধিদলকে নবান্নে এই হিসেব তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ‘আপনা গাঁও, আপনা রাজ’ স্লোগান তুললেন ছত্রধর, পৃথক কমিটি গড়ে চাপ বাড়াতে চান
বিজেপি শাসিত রাজ্যে নানা দুর্নীতি আছে। তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাংলার টাকা দেওয়া হচ্ছে না। যেখানে বাংলা একের পর এক প্রকল্পে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আর সেই শংসাপত্র দিয়েছে খোদ কেন্দ্রীয় সরকার। তাহলে বকেয়া টাকা মিলছে না কেন? প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে সূত্রের খবর। পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী এতদিন কেন্দ্র–রাজ্যের শেয়ার ছিল ৪১:৫৯ শতাংশ। ষোড়শ অর্থ কমিশনের কাছে এই শেয়ার ৫০:৫০ করার দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী। এমনকী কেন্দ্রের কাছ থেকে বকেয়া বাবদ রাজ্যের প্রাপ্য দ্রুত মেটানোর দাবি জানান মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর।
কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা থেকে রাজ্যের দাবি সব জানানো হয়েছে অর্থ কমিশনের কর্তাদের সামনে। সেগুলি নোট করে নিয়েছেন তাঁরা। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনও আশ্বাস দেননি বলে জানা গিয়েছে। আজকের বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম–সহ নানা রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ২০১১ সালে ক্ষমতা থেকে চলে যাওয়ার পর এই প্রথম নবান্নে এলেন মহম্মদ সেলিম। মুখোমুখি দেখা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কিন্তু কোনও কথা হল না।