সময়টা বেশ লম্বা। গত ডিসেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত বাংলাকে ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন্দ্র দিচ্ছে না। বাংলার জন্য চলতি বছর কোনও শ্রমদিবসের টার্গেটও বরাদ্দ করেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। সুতরাং বঞ্চিত হচ্ছেন অদক্ষ শ্রমিকরা। কিন্তু আশা ছাড়েনি নবান্ন। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র টাকা দিলে সমস্ত নিয়ম মেনেই ১০০ দিনের কাজ করার জন্য সব জেলাকে সতর্ক করে দিল পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। সোমবার এই মর্মে একটি নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে।
ঠিক কী জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়? এই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করা হয়েছে, নিয়ম ভাঙলে তার দায় জেলা স্তরের প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টিং এজেন্সিকে নিতে হবে। আর ফেরত দিতে হবে নিয়মবহির্ভূতভাবে খরচ হওয়া টাকাও। ১০০ দিনের কাজ নিয়ে গ্রামোন্নয়ন বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি মানতে চলেছে কেন্দ্র। এই কাজ দেখতে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় পরিদর্শক দল জেলা পরিদর্শন করছেন। তারা গ্রামপঞ্চায়েত ও ব্লক স্তরে কাজ দেখতে এসেছেন। তা মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে।
আর কী উল্লেখ করা হয়েছে? এই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, কোনও উপভোক্তার জবকার্ড কোনও মতেই পঞ্চায়েতের আধিকারিক বা সদস্যের কাছে থাকবে না। তথ্য যোগ করার জন্য কারও জবকার্ড নিলেও তা দ্রুত ফেরত দিতে হবে। ১০০ দিনের কাজের জন্য প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সাতটি রেজিস্টার খাতা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেগুলি রাখতে হবে— জবকার্ড, গ্রামসভা, কাজের চাহিদা ও পেমেন্ট, অভিযোগ এবং সরঞ্জাম সংক্রান্ত তথ্য। গত ডিসেম্বর থেকে ১০০ দিনের কর্মসংস্থান প্রকল্পে মজুরি বাবদ ৬ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র।
নবান্ন থেকে কী জানা যাচ্ছে? নবান্ন সূত্রে খবর, জেলাশাসকদের কাছে পঞ্চায়েতের বিশেষ সচিব পদমর্যাদার এক আধিকারিক চিঠি লিখে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক কাজের যে তালিকা তৈরি করেছে তার ভিত্তিতেই ১০০ দিনের কর্মসংস্থান প্রকল্প রূপায়ণ করাতে হবে। তার বাইরে কোনও কাজ হলে তা বেআইনি। যেখানে কাজ হবে সেখানে প্রকল্পের নাম ও প্রাসঙ্গিক কিছু তথ্য নির্দিষ্টভাবে লিখে বোর্ড লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই সিটিজেন ইনফর্মেশন বোর্ড (সিআইবি) লাগাতে হবে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী। পলি তোলার মতো কাজে বেশি আগ্রহ না-দেখানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়। কারা কাজ করবেন তার একটি ই–মাস্টার রোল তৈরি করতে হবে। যার ভিত্তিতেই মজুরির জন্য পে অর্ডার ইস্যু করতে হবে।