পাহাড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত করতে বরাবরই উদ্যোগী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই কখনও দেখা গিয়েছে বিমল গুরুংকে কাছে টানতে, কখনও বিনয় তামাং, অনীত থাপা এবং বিমল লামাও কাছে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এই আবহে সিকিমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিংকে দেখা গেল নবান্নে এসে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই সেই ঘটনার ভিডিয়ো পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। মঙ্গলবার নবান্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন পবন চামলিং। আর তখন থেকেই নয়া সমীকরণের গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ বলে তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সত্যিই কি সৌজন্য সাক্ষাৎ? নবান্নে দু’পক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ বৈঠকও হয়। রাজনৈতিক আলোচনা সেখানে হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে এটা শুধু সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল না বলেই মনে করা হচ্ছে। এই সাক্ষাৎ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘১৯৯৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত টানা ২৫ বছর সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী থেকে নজির গড়েছেন পবন চামলিং। এদিন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। যা ছিল রাজনৈতিক এবং সৌজন্যমূলক।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সিকিম সফরে আসার জন্য পবন চামলিং আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। দুই রাজ্যের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো এবং একসঙ্গে কাজ করার উপরও তিনি গুরুত্ব দেন বলে খবর।
সিকিমে বাংলার নাগরিকরা যান। পর্যটকরা সারা বছর বাংলা থেকে সিকিম যান। আর সেখানে গিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন। আবার নানা বিপদেও পড়েন। তখন দুই সরকারের সহযোগিতায় তাঁদের উপকার করা হয়। পবন চামলিং এখন সিকিমে কোণঠাসা হয়ে রয়েছেন। তিনি সেই অবস্থা থেকে বেরতেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সাহায্য চেয়েছেন বলে সূত্রের খবর। তাৎপর্যপূর্ণভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে উল্লেখ করেছেন, এটা রাজনৈতিক এবং সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ। সুতরাং এদিনের বৈঠকে রাজনীতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে, সেটার ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: ‘কোনও কিছুই অসম্ভব নয়’, নীতীশের মহাজোটে ফেরার জল্পনা উসকে দিলেন মিসা ভারতী
দেশের সবচেয়ে বেশি দিন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন পবন চামলিং। একটা সময় ছিল যখন পবন চামলিং এবং সিকিম সমার্থক হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ২০২৪ সালের বিধানসভায় সিকিমে কার্যত ভরাডুবি হয়ে যায় পবন চামলিংয়ের দল সিকিম ডেমোক্র্যাটিক মোর্চার। এখন তাঁর দল কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বিজেপির সাজানো ছকে পবন চামলিং গোহারা হয়েছেন সিকিম ক্রান্তিকারি মোর্চার প্রেম সিং তামাং। সুতরাং রাজনৈতিক সমীকরণ বলতে গেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পবন চামলিংয়ের রাজনৈতিক শত্রু একই— বিজেপি। তাই আগামী দিনে উত্তর–পূর্বে নতুন কোনও রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হতে পারে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।