একদিকে কেন্দ্রীয় টিম আসছে প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখতে। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসছেন সরেজমিনে সব দেখতে। কিন্তু তারপরও কোনও বড় অনিয়ম বা দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসেনি। অথচ পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে নানা অজুহাতে বাংলার একাধিক গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। রাজ্য সরকার যখন প্রকল্পের টাকা আশা করছে তখন ১০০ দিনের কাজ, আবাস এবং সড়ক যোজনা নিয়ে রাজ্যকে ৪৯৩ পাতার চিঠিও পাঠিয়েছে তারা। এবার সেই চিঠির পাল্টা প্রায় ৩০০ পাতার চিঠি পাঠিয়ে রাজ্য সরকার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল।
কী দাবি করা হয়েছে চিঠিতে? নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের পাঠানো চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, প্রকল্পগুলি নিয়ে কেন্দ্রের অভিযোগের অধিকাংশই ভিত্তিহীন। আর যেসব অভিযোগের সত্যতা রয়েছে সেসব ক্ষেত্রে যথাযথ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রককে এই কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছে নবান্ন। আগের কথা বারবার লেখা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ সেগুলির নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এভাবে চিঠি চালাচালিতে প্রকল্প আটকে যাবে এবং সাধারণ গরিব মানুষ বঞ্চিত হবেন বলে চিঠিতে লেখা হয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে নবান্নে এসে পৌঁছয় কেন্দ্রের চিঠি। সেখানে বিজেপির ‘ভিআইপি নেতা–মন্ত্রীদের’ তোলা পুরনো অভিযোগই মূলত সেই চিঠিতে লেখা রয়েছে। যদিও সেই অভিযোগের ৫০ শতাংশের নিষ্পত্তি আগেই হয়ে গিয়েছিল। জেলা থেকে আসা সমস্ত রিপোর্ট এবং পুরনো অভিযোগ নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য একত্রিত করে কেন্দ্রকে চিঠির আকারে পাল্টা পাঠিয়েছে রাজ্য। কোন অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাজ্য নির্দিষ্টভাবে কী পদক্ষেপ করেছে এবং তা কবে কবে কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে, সেসব বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
ঠিক কী লেখা আছে চিঠিতে? এই বিষয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘এবার আমরা প্রত্যেকটি ক্ষেত্র ধরে ধরে সবিস্তারে ব্যাখ্যা দিয়ে নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করে দিলাম। কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। সড়ক যোজনা নিয়ে যে সমস্ত অভিযোগ এসেছিল, তার মধ্যে কিছু ছিল কাজ অসম্পূর্ণ থাকা নিয়ে। সেই সমস্ত কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। সব তথ্য প্রমাণ–সহ তুলে ধরা হয়েছে চিঠিতে।’
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ২০২২ সালের জুলাই মাসে রাজ্যের ১৫টি জেলায় কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে এসেছিল নয়াদিল্লির প্রতিনিধিদল। তাদের সুপারিশ মতো ১০০ দিনের ভুয়ো কাজ সংক্রান্ত এফআইআর থেকে শুরু করে যা যা পদক্ষেপ করা হয়েছে সেটাও আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রকে। কেন্দ্র কবে বাংলার প্রকল্পগুলির জন্য টাকা দেয় এখন সেটাই দেখার।