এবার রাজ্যের নানা স্তরের সরকারি কর্মী এবং অফিসারদের মধ্যে বৈষম্য কাটাতে উদ্যোগ নিচ্ছে নবান্ন। এই অভিযোগ বারবার ওঠায় তা কানে পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আজ, বুধবার তিনি দিঘা সফরে রয়েছেন। তার মধ্যেই অভিযোগ, নবান্ন–সহ রাজ্যের নানা সেক্রেটারিয়েট বা সচিবালয়ের কর্মীরা সবসময়ই বাড়তি সুযোগ–সুবিধে পেয়ে থাকেন। এমনকী পদোন্নতির ক্ষেত্রেও তাঁরাই অগ্রাধিকার পান। সেটা অন্যান্য সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে কেন হবে না? এই প্রশ্ন উঠতে থাকে। এই অভিযোগ নিরসন করতেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গঠিত হয়েছে হাইপাওয়ার্ড কমিটি। কেমন করে এই বৈষম্য দূর হবে সেটার খসড়া তৈরি করতে আগামিকাল, বৃহস্পতিবার নবান্নে জরুরি বৈঠকে বসছেন হাইপাওয়ার্ড কমিটির সদস্যরা।
নবান্ন সূত্রে খবর, রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আর এই কমিটির কো–চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তার সঙ্গে অর্থ এবং পার্সোনেল অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিপার্টমেন্টের অতিরিক্ত সচিব, পূর্ত দফতরের যুগ্ম সচিব এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের এক যুগ্ম অধিকর্তাকে এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ–অভিযোগ আছে। সুপ্রিম কোর্টে তা নিয়ে মামলা চলছে। তাই এই অবস্থায় সরকারি কর্মীদের মধ্যে পদোন্নতির ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে চাইছে রাজ্য সরকার। তাতে সরকারি কর্মীদের কাজে উৎসাহ আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বর্ধমানের নিখোঁজ ব্যক্তির তদন্ত করবে সিআইডি, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাপ বাড়ল
রাজ্য প্রশাসন চলে তিনটি ধাপের নিয়ম মেনে। সবার উপরে থাকে সেক্রেটারিয়েট। দ্বিতীয় ধাপে থাকে ডিরেক্টরেট এবং তৃতীয় ধাপে থাকে রিজিওনাল অফিস। সবার উপরে যেহেতু সেক্রেটারিয়েট থাকে তাই সবথেকে বেশি সুযোগ–সুবিধা ওখানের কর্মীরা পান। আবার সেক্রেটারিয়েট বিভাগের কর্মীদের পদোন্নতির সুযোগ অনেক বেশি থাকে। এখানেই লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক কর্মসূত্রে পদোন্নতি পেয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি, ডেপুটি সেক্রেটারি, জয়েন্ট সেক্রেটারি, স্পেশ্যাল সেক্রেটারি পর্যন্ত হতে পারেন। কিন্তু ডিরেক্টরেট বা রিজিওনাল অফিসের ক্ষেত্রে এই সুবিধা থাকে না। বরং বড় জোর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার হতে পারেন।
শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও সুবিধা পান না তাঁরা। এই নিয়ে ক্ষোভ আছে। আর এই ক্ষোভ নিরসন করতেই তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘সেক্রেটারিয়েট, ডিরেক্টরেট এবং রিজিওনাল অফিসের কর্মীদের মধ্যে বৈষম্য দূর করার জন্য আমরা বহুদিন ধরেই দাবি জানাচ্ছি। এই বৈষম্যের বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করা হয়েছে। রাজ্য সরকার দেরিতে হলেও এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার ঘটনায় আমরা খুশি। নতুন বছর থেকে সব বৈষম্য কেটে যাক। আমরা তাই চাই।’