জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ছিল, রাজ্যে সেন্ট্রাল রেফারেল ইউনিট তৈরি করতে হবে। এই ব্যবস্থা হলে একজন রোগীকে হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসার জন্য ঘুরতে হবে না এবং প্রাণ যাবে না বিনা চিকিৎসায়। রাজ্য সরকার সেই দাবি মেনে নিয়েছিল। যার জন্যই দ্রুত ব্যবস্থা করতে শুরু করেছে। বাঙুর হাসপাতাল দিয়ে পাইলট প্রজেক্ট শুরু হয়। এবার তা জেলা হাসপাতালগুলিতে সেন্ট্রাল রেফারেল ইউনিটের পরিকাঠামো তৈরির জন্য জেলাশাসক এবং জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছ থেকে সুস্পষ্ট প্রস্তাব চাইল নবান্ন।
কলকাতা এবং জেলায় এই পরিষেবা চালু হয়ে গেলে সেটা হবে যুগান্তকারী পদক্ষেপ। সেক্ষেত্রে সরকারি হাসপাতালগুলির দুয়ারে চিকিৎসার জন্য লাট্টুর মতো ঘুরতে হবে না। বিনা চিকিৎসায় প্রাণ যাবে না। এতদিন দেখা যেত, জেলা থেকে কলকাতার কোনও হাসপাতালে রেফার করা রোগীকে পাল্টা শহরের বুকে অন্য সরকারি হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং রোগী ঘুরতেই থাকছে। অথচ চিকিৎসা না পেয়ে পথেই মৃত্যু হচ্ছে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সেন্ট্রাল রেফারেল ইউনিটের পাইলট প্রজেক্ট গ্রহণ করা হয়েছে। ডিসেম্বর মাসেই সারা রাজ্যে এই প্রকল্প কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আর এই ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে জেলাস্তরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর সম্পূর্ণ সংস্কার করতে চাইছে নবান্ন।
আরও পড়ুন: অনুব্রত মণ্ডলের উপস্থিতিতে কালীপুজো জাঁকজমক, প্রতিমা জুড়ে বিপুল পরিমাণ গয়না
এই পরিকাঠামো গড়ে তুলতে আর্থিক ব্যবস্থা করতে ন্যাশনাল হেলথ মিশনকে হাতিয়ার করা হচ্ছে। ষষ্ঠদশ অর্থ কমিশনের কাছেও অর্থসংস্থানের প্রস্তাব রাখা হবে। এই ব্যবস্থা হয়ে গেলে রোগীকে আর রেফার যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে না। আর পথেই মৃত্যু হবে না। আগে থেকেই বেড আছে দেখে সেখানে পাঠানো হবে। ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মহকুমা হাসপাতাল বা জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার হয়ে রোগী বেশি আসে কলকাতা শহরে। কিন্তু পরিকাঠামো না থাকায় ভুগতে হয় রোগীকে। সক্রিয় হয়ে ওঠে দালালরা। রেফারেল সিস্টেমে রাজ্য সরকার তথ্য প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করছে। সুতরাং আর রোগী বিপদে পড়তে হবে না এবং দালালরাজ খতম হবে।
এখন নিয়ম অনুযায়ী, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোনও রোগীকে চিকিৎসার জন্য সরাসরি কলকাতার কোনও হাসপাতালে ভর্তি করা যাবে না। যদি না পরিস্থিতি জটিল আকার নেয়। তবে তাঁদের মহকুমা হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল বা জেলায় থাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে। তাই এখন জেলা, মহকুমা হাসপাতাল এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোর উন্নতি করা হচ্ছে। যাতে সেখানে সর্বক্ষণ চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মী থাকেন। তার সঙ্গে শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি, অপারেশন থিয়েটার, হাসপাতালে লিফট, চিকিৎসকদের বিশ্রাম কক্ষ, শৌচালয়, বিশুদ্ধ পানীয় জল, পর্যাপ্ত আলোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পেশ করতে বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিক্যাল অফিসারদের বসার উপযুক্ত ঘরের প্রস্তাবও পাঠাতে বলা হয়েছে।