তারকাখচিত মঞ্চে তখন মুকেশ আম্বানি থেকে শুরু করে সজ্জন জিন্দাল—কে নেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে। বাংলার জন্য বিনিয়োগ–লগ্নি টানতে তখন মরিয়া মুখ্যমন্ত্রী। কারণ পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান তিনি। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে এই বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্প করার জন্য জমি এবং পরিবেশ যে আছে, সে কথা নিজে মুখেই শিল্পপতিদের সামনে তুলে ধরেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেমের থেকে একধাপ এগিয়ে ‘স্টেট লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটি’ গঠন করার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার এটা নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল নবান্ন। যাতে লগ্নি, বিনিয়োগে সময় নষ্ট না হয়।
শিল্পপতিদের যাতে কোনও সময় নষ্ট না হয় সেই বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ এবার ৪ লক্ষ ৪০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে বঙ্গে। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন এবার ছিল মেগা ইভেন্ট। সেখান থেকে যা প্রস্তাব এসেছে তা দ্রুত কার্যকর করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। যাতে বিরোধীরা কথা বলার সুযোগ না পায়। আর বাংলায় একের পর এক আসা প্রস্তাব যদি বাস্তবায়িত করা যায় তাহলে বিপুল কর্মসংস্থান হবে। যা সামনে নিয়ে এসে ২০২৬ সালের ভোটে সাফল্য অর্জন করা যাবে। তাই ২০২৫ সালের মধ্যে গোটা বিষয়টি সেরে ফেলতে চান মুখ্যমন্ত্রী। আর তাই সম্মেলন শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার। তার পরই সময় নষ্ট না করে শুক্রবার এই কমিটি গঠনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নবান্ন।
আরও পড়ুন: আইনি নোটিশ পেলেন বিধায়ক সায়ন্তিকা–রেয়াত, রাজ্য–রাজভবনের সংঘাতে নয়া মোড়
‘স্টেট লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটি’র মাথায় আছেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। তার সঙ্গে আরও ১৬ জন এই কমিটিতে থাকছেন। তাতে শিল্প, অর্থ, বিদ্যুৎ–সহ একাধিক দফতরের সচিবরা আছেন। ওই কমিটিতে রাখা হচ্ছে রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ কর্তাদেরও। পরে আরও কাউকে যাতে কমিটিতে আনা যায়, সেই সুযোগ রেখেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী শিল্প সম্মেলনে বলেছিলেন, ‘বাংলা আপনাদেরই গৃহ। এখানে আসুন, বিনিয়োগ করুন। এখন আর লোডশেডিং হয় না। ধর্মঘট হয় না বাংলায়, ফিরেছে কর্মসংস্কৃতি। পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যস্তরে শিল্প সমন্বয় কমিটি গঠন করা হবে। আর সেই কমিটির নেতৃত্ব দেবেন মুখ্যসচিব। এই কমিটির মানে শুধু সিঙ্গল উইন্ডো নয়। এর কাজ হবে বৃহত্তর। এই কমিটি সমন্বয় করবে সব দফতরের সঙ্গে। আর শিল্পবান্ধব পরিস্থিতি আরও মজবুত করবে।’
এছাড়া নবান্ন সূত্রে খবর, এই কমিটিতে দমকল, পরিবেশ, ভূমি রাজস্ব, অর্থ, আবাসন, শিল্প সব দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে গড়ে উঠেছে। যাঁরা দেখবেন যে বিনিয়োগের জন্য ছাড়পত্র দিতে যেন সময় না লাগে। প্রতি ১৪ দিন অন্তর একবার করে এই কমিটি বৈঠক করবে। কোথাও কোনও বাধা থাকলে তা দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাতে এবারের সম্মেলনে আসা প্রস্তাবগুলির বাস্তবায়ন ঘটে তার জন্যই দ্রুত এই ‘স্টেট লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। শীঘ্রই এই কমিটির বৈঠক হতে চলেছে।