সদ্য কথা হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংয়ের সঙ্গে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের। গ্রামোন্নয়নের কাজে এখন স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই দুর্নীতি রোধে একাধিক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। আর এই টেলিফোনে কথোপকথনের পর একেবারে নীচুস্তরে প্রকল্পের সুবিধা প্রকৃত উপভোক্তাদের পৌঁছে দিতে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। সেটা হল— পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় গ্রামোন্নয়নের কাজেরও সোশ্যাল অডিট শুরু হচ্ছে ২০২২–২৩ অর্থবর্ষ থেকে। এর মাধ্যমে ধরা পড়বে ‘ভুয়ো কাজ।’
কেন এমন পদক্ষেপ করা হচ্ছে? নবান্ন সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজ, আবাস এবং সড়ক যোজনায় ২০২২–২৩ অর্থবর্ষে বাংলাকে কোনও বরাদ্দ দেয়নি নরেন্দ্র মোদীর সরকার। নাম বদল–সহ নানা অনিয়মের কারণে প্রকল্পগুলির বরাদ্দ আটকানো হয়েছে বলে রাজ্যকে জানিয়েছিল কেন্দ্র। তবে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের আওতায় ২০২১–২২ অর্থবর্ষের গ্রামোন্নয়নের বরাদ্দ অর্থ (৩২১৭.০২ কোটি টাকা) পেয়েছে রাজ্য। আবার ২০২২–২৩ অর্থবর্ষে প্রায় ৩৫০০ কোটি টাকার প্রথম কিস্তি পাওয়ার কথা রাজ্যের। এই অবস্থায় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকায় হওয়া গ্রামোন্নয়নের কাজের সোশ্যাল অডিট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়ার ক্ষেত্রে এই পদক্ষেপ।
আর কী জানা যাচ্ছে? ইতিমধ্যেই গ্রামীণ আবাস যোজনার পৃথক সোশ্যাল অডিট ২০১৯ সালে শুরু হয়। তার আগে ১০০ দিনের কাজের সঙ্গেই এই প্রকল্পের সোশ্যাল অডিট করা হতো। কেন্দ্রের নির্দেশের পর এই দুই প্রকল্পের পৃথক সোশ্যাল অডিট শুরু করেছে রাজ্য সরকার। একই নিয়ম এবার করা হচ্ছে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থে গ্রামোন্নয়নের কাজের ক্ষেত্রেও। পৃথকভাবে এই সোশ্যাল অডিট করতে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক কিছু নির্দেশ পাঠিয়েছে রাজ্যকে। সঙ্গে সঙ্গে উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যও। তবে নগরোন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ অর্থে হওয়া কাজের সোশ্যাল অডিট নিয়ে এখনও কোনও নির্দেশিকা আসেনি বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
কী কী ক্ষেত্রে বরাদ্দ হয় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা? এখানে দু’টি খাতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা বরাদ্দ হয়। শর্তাধীন এবং নিঃশর্ত তহবিল। শর্তাধীন তহবিলের টাকায় শৌচালয় তৈরি এবং পানীয় জল সরবরাহের কাজ করতে হয়। আর নিঃশর্ত তহবিলের টাকা ব্যবহার করা হয়—বিদ্যুৎ সরবরাহ, সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার, রাস্তা তৈরি–সহ নানা কাজে। দুটি ক্ষেত্রেই সোশ্যাল অডিট হবে। এক্ষেত্রে মেনে চলা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন।