মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৌলতে প্রাণে বেঁচে গেলেন তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক পরেশ পাল। লোকসভা নির্বাচনে তীব্র গরমে কম ঝক্কি পোহাতে হয়নি নেত্রীর বিশ্বস্ত সৈনিক পরেশকে। তারপর সাফল্য এলেও বিশ্রাম নেওয়ার ফুরসত নেই। কারণ এখন এসে পড়েছে মানিকতলা–সহ আরও তিন বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন। তাই নবান্নে বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে হাজির হন পরেশ পাল। কিন্তু তাঁকে দেখেই খটকা লাগে মুখ্যমন্ত্রীর। শরীর ভাল আছে কিনা জিজ্ঞাসাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। পরেশ মাথা নেড়ে হ্যাঁ বললেও মুখ্যমন্ত্রীর বিষয়টি ভাল ঠেকেনি। তাই সঙ্গে সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে দিলেন, পরেশ পালের শরীর খারাপ মনে হচ্ছে। অবিলম্বে ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হোক।
এই নির্দেশ পেয়েই তখন উপস্থিত কুণাল ঘোষ, স্বপন সমাদ্দার দ্রুত পরেশ পালকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন। সেখানে গিয়ে চিকিৎসকরা দেখলেন, মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করেছে বেলেঘাটার বিধায়কের। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়ায় এখন আপাতত স্থিতিশীল পরেশ পাল। তাঁর বিপদও কেটে গিয়েছে। সোমবার বিকেলের এই ঘটনা এখন মঙ্গলবার গোটা রাজ্যে চাউর হয়ে গিয়েছে। এই বৈঠকে যোগ দিতে আসেন অতীন ঘোষও। তিনিও এই ঘটনার সাক্ষী। অবাক হন সকলেই। কারণ কেউ বুঝতে পারেননি অসুস্থ হচ্ছেন বিধায়ক পরেশ পাল। একপলকেই তা ধরে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী। যা দেখে স্তম্ভিত সকলেই।
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গের জেলায় সক্রিয় কিডনি পাচার চক্র, গৃহবধূর অভিযোগে উত্তর দিনাজপুর তোলপাড়
এই ঘটনা যদি মুখ্যমন্ত্রীর ধরতে দেরি হতো তাহলে বিধায়ক পরেশ পালের প্রাণ সংশয় দেখা দিত। পরেশ পালকে মুখ্যমন্ত্রী আজ থেকে চেনেন না। প্রথম দিন থেকেই চেনেন। বিরোধী নেত্রী তথা সাংসদ থাকার সময় থেকেই পরেশ পালকে চেনেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নের এক অফিসার বলেন, পরেশ পালকে দেখেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তোমার কি শরীর খারাপ লাগছে? ভিতরে কিছু হচ্ছে? চোখমুখ দেখে তো আমার ঠিক লাগছে না।’ পরেশ পাল তখন বলে চলেন, তিনি ঠিক আছেন। তাঁর কোনও শারীরিক অসুবিধা হচ্ছে না। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সে কথায় গুরুত্ব না দিয়ে কুণালদের নির্দেশ দেন পরেশ পালকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে। আর হাসপাতালে পৌঁছেই মস্তিষ্কে স্ক্যান করা হয় পরেশের। ধরা পড়ে, পরেশের মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধছে। দ্রুত তাঁর চিকিৎসা শুরু করা হয়। আজ, মঙ্গলবার পরেশের শারীরিক অবস্থার অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।
আর আজ, মঙ্গলবার এই বিষয়টি নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মমতাদির অসাধারণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বরাবরই। তার জন্য আজ বড় বিপদ থেকে পরেশদাকে রক্ষা করা গেল। সোমবার দেখলাম, মমতাদির পর্যবেক্ষণ কেমন ম্যাজিকের মতো কাজ করল।’ আজ মঙ্গলবারও বৈঠক রয়েছে নবান্নে। সেই বৈঠকে কুণাল, অতীন, স্বপন ছাড়াও মানিকতলা বিধানসভা এলাকার কাউন্সিলররাও থাকবেন। কিন্তু পরেশ পাল সেখানে যেতে পারবেন না। কারণ এখন কয়েকদিন বেলেঘাটার বিধায়ককে পর্যবেক্ষণে রেখে দেখা হবে। সুস্থ হলে ছাড়া হবে।