হাতে আর ১৫ মাস। সময় বলতে এইটুকুই। তারপরই ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোট। আর তাই রাজ্য সরকারের কাজে কোনও খামতি রাখতে চান না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারি কাজ কত দ্রুত এগোচ্ছে সেটা জানতে এবার মন্ত্রীদের উদ্দেশে ফরমান জারি করলেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের রাশ আগেই নিজের হাতে নিয়েছিলেন। এবার প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়েও কড়া হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বিভিন্ন দফতরের কাজকর্ম নিয়ে খোঁজখবর করতে শুরু করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। একাধিক দফতরের মন্ত্রী এবং অফিসারদের নিয়ে বৈঠকও করেছেন। যে সব দফতরের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে সেগুলির কাজ দ্রুত শেষ করতে বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর প্রতি সপ্তাহে কাজের হিসেব দিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর।
নবান্ন সূত্রে খবর, প্রত্যেক দফতরের কাজ কতটা করে এগোচ্ছে তার সাপ্তাহিক রিপোর্ট চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দফতরগুলির তালিকায় আছে পূর্ত ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি, পুর ও নগরোন্নয়ন, কৃষি, সেচ ও জলসম্পদ, পরিবহণ, স্বাস্থ্য–সহ আরও বেশ কয়েকটি। সরাসরি সাধারণ মানুষ এই দফতরগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। সোমবার বিধানসভার অধিবেশনের পর মন্ত্রী পুলক রায় ও তাঁর দফতরের অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় এবং সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সামনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, এবার থেকে প্রত্যেক সোমবারই বৈঠক হবে। প্রতি সপ্তাহের কাজের অগ্রগতি নিয়ে রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
আরও পড়ুন: পানীয় জলের অপচয় নিয়ে শতাধিক এফআইআর, হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করল রাজ্য সরকার
আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার ঘটনা এবং নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরে বিরোধীরা হাওয়া গরম করছে। তাই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে বাড়তি নজর দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এইসব নিয়ে অনেক মিছিল, মিটিং, সভা হয়েছে। এমনকী উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবিও। এখন সেই প্রতিবাদ অনেকটাই স্তিমিত হলেও আবার পথে নামতে চান জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে ইস্যু আলাদা। এই স্বাস্থ্য দফতরকে নিয়ে নাগরিকদের কাছে বাড়তি সুযোগ করে দিতে উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী। তাই স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টও প্রত্যেক সপ্তাহে তাঁর কাছে পাঠাতে হবে এমনই নির্দেশ এসেছে বলে সূত্রের খবর।
আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর আগে থেকে রাজ্যের নানা দফতরের কর্মকাণ্ড নিয়ে সক্রিয় হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনের কাজ নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ কমাতে পদক্ষেপ করছেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, সাধারণ মানুষ কাজ দেখেন। কদিন আগে তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও প্রশাসনের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এবার দলের পাশাপাশি প্রশাসনের রাশও টানতে শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নানা দফতরের কাজের খতিয়ান চেয়ে সেই প্রমাণই দিলেন। আর এভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করলেন।