ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের জেরে বুধ ও বৃহ্স্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে হবে না কোনও শুনানি। এখবর ঘোষণা হতেই হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ির পথ ধরলেন নারদকাণ্ডে গ্রেফতার মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ কলকাতার SSKM হাসপাতাল থেকে ছুটি নেন তিনি। এর পর তাঁকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে নথিপত্রে সই করে গড়িয়াহাটের বাড়িতে ফিরবেন তিনি। এর ফলে নারদকাণ্ডে গ্রেফতার নেতা-মন্ত্রীদের মধ্যে হাসপাতালে রইলেন শুধু তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুব্রতবাবুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। এর পর তাঁকে ছুটি দিতে সম্মত হন তাঁরা। ছুটির ফর্মে সই করে উডবার্ন ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে আসেন সুব্রতবাবু। এর পর গাড়িতে ওঠার আগে ভি চিহ্ন দেখান তিনি। হাসপাতাল থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি জেলে।
গত ১৭ মে সোমবার সকালে নারদকাণ্ডে সুব্রতবাবুকে গ্রেফতার করে সিবিআই। নিম্ন আদালতে জামিন হলেও হাইকোর্টে সেই রাতেই খারিজ হয় সেই নির্দেশ। ফলে সোমবার গভীর রাতে প্রেসিডেন্সি জেলে যেতে হয় সুব্রতবাবুসহ ৪ জনকে। গত মঙ্গলবার সকালে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে জেল কর্তৃপক্ষ।
নারদকাণ্ডে অভিযুক্তদের জামিন নিয়ে গত সপ্তাহে একমত হতে পারেনি হাইকোর্ট। যার ফলে এই সপ্তাহে ৫ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চে শুরু হয়েছে শুনানি। সোমবার মামলাটির শুনানির পর বুধবার ফের তার শুনানি হওয়ার কথা ছিল হাইকোর্টে। কিন্তু ঝড়ের জন্য আগামিকাল শুনানি হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে হাইকোর্ট।
ওদিকে মঙ্গলবার বৃহত্তর বেঞ্চে মামলার শুনানির সিদ্ধান্ত খারিজ করার দাবিতে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে হাইকোর্ট। তাতে যেমন সিবিআইয়ের আবেদন খারিজ করে ধৃতদের মৌলিক অধিকারের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন বিচারপতিরা, সঙ্গে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, মামলা পিছোতে চাইলে তারা জামিন দিয়ে দেবে ধৃতদের। এমনকী হাইকোর্টকে এড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টে আসায় ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে সিবিআইয়ের আইনজীবীকে। চাপের মুখে মামলাটাই প্রত্যাহার করে নেন সিবিআইয়ের আইনজীবী।
আইনজ্ঞদের মতে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ব্যাখ্যা ও দৃষ্টিভঙ্গী হাইকোর্টে মামলার শুনানির রূপরেখা অনেকটাই ঠিক করে দিয়েছে। ফলে হাইকোর্টে শুনানি হলে জামিন পাওয়া প্রায় নিশ্চিত। তাই হাসপাতালে থেকে আর নিজের অসুস্থতার তত্ত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত করার দরকার নেই সুব্রতবাবুর। তাই সন্ধ্যাতেই SSKM ছেড়ে বাড়ির পথ ধরলেন তিনি। এখন দেখার আরেক অভিযুক্ত মদন মিত্র কী করেন।