বাংলায় বিজেপি পেয়েছে মাত্র ১২টি আসন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২৯টি আসন। গোটা দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। শরিক ধরে এখন এনডিএ সরকার গড়ে উঠেছে। রবিবার রাতেই হয়েছে শপথগ্রহণ। আর এবার নারদ মামলার শুনানিতে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ল। নারদ মামলায় কেন গ্রেফতার হল না মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীকে? আদালতে এই প্রশ্নই তুললেন বর্ধমানের প্রাক্তন পুলিশ সুপার এসএমএইচ মির্জার আইনজীবী শ্যামল ঘোষ। নারদ স্টিং অপারেশনের সময় তিনি বর্ধমানের পুলিশ সুপার পদে ছিলেন। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। এখনও তা চলছে। পুলিশকর্তা এসএমএইচ মির্জা আজ জানতে চান, নারদ কাণ্ডে শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) কী পদক্ষেপ করেছে? উত্তর জানতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।
এদিকে আজ, সোমবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে এই মামলার শুনানি ছিল। তিনি প্রশ্ন ওঠে, নারদ মামলায় শোভন চট্টোপাধ্যায়, মদন মিত্র, ফিরহাদ হাকিম, এসএমএইচ মির্জার বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হচ্ছে। কিন্তু বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কি তদন্ত হচ্ছে? শুভেন্দু অধিকারী গ্রেফতার নয় কেন? নারদ মামলায় আজ হাজিরা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় এবং মদন মিত্র। নগর দায়রা আদালতে তাঁরা হাজিরা দেন। সেখানেই এমন প্রশ্ন ওঠে। ইডির আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র জানান, তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে সে বিষয়ে জেনে তার পরেই বলা সম্ভব। কলকাতা হাইকোর্টে মামলাটি বিচারাধীন বলেও তিনি জানান।
আরও পড়ুন: রাজ্যের ১২১টি পুরসভার মধ্যে ৬৯টিতেই এগিয়ে বিজেপি, তদন্ত শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস
অন্যদিকে বিচারক ইডির আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, বাকিদের বিরুদ্ধে কী তদন্ত এগোচ্ছে? মির্জার আইনজীবী আদালতে বলেন, ‘মুকুল রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আমার মক্কেল অভিযুক্ত। তাহলে মুকুল রায়ের বিরুদ্ধে কী তদন্ত হচ্ছে? বাকি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী তদন্ত হচ্ছে? কেউ জানে না। এতে আমরা ভুক্তভোগী। কেন মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হল না? আমার মক্কেল ৫৬ দিন জেল খাটল।’ এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৮ অগস্ট। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েলের একটি স্টিং অপারেশনের ভিডিয়ো’র জেরে হইচই পড়ে যায় রাজ্য–রাজনীতিতে। যে ভিডিয়ো যাচাই করে দেখেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা ডিজিটাল।
এছাড়া মির্জার আইনজীবীর প্রশ্ন, ‘কেন শুধু পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেন বাকি যে ১২ জন অভিযুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন মামলা করা হল না? অর্থ তছরুপ মামলায় আমার মক্কেলের যোগ এখনও প্রমাণ করা যায়নি। মুকুল রায় যদি অব্যাহতি পেয়ে যান, তা হলে কেন মির্জা পাবেন না?’ নারদ মামলায় মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছিল সিবিআ–ইডি। এখন ১১ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ (ববি) হাকিম, প্রয়াত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রয়াত সাংসদ সুলতান আহমেদ, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ সৌগত রায়, অপরূপা পোদ্দার, মদন মিত্র, ইকবাল আহমেদ, মুকুল রায় এবং পুলিশকর্তা মির্জা। মৃত্যুর পরে এই তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে সুলতান আহমেদ ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নাম।