ভিক্টোরিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের শুরুতে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেওয়ার ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যে তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক। ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের পক্ষ থেকে। নেতাজি জন্মজয়ন্তীর সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে ‘রাজনৈতিক স্লোগান’–এর প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য রাখেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি, মত তৃণমূল নেতৃত্বের।
ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এ ঘটনা খুব পরিকল্পিত। সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চকে ব্যবহার করে নেতাজিকে সামনে রেখে যাঁরা এই কাজ করলেন তাঁদের বাঙালি, বাংলার মানুষ কোনওদিন ক্ষমা করবে না। নেতাজির ১২৫তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে কালিমালিপ্ত করল বিজেপি ও তার সমর্থকরা।’
মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে এদিন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে অপমান মানে বাংলার অপমান। নেতাজির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত। সেই অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেওয়ার কী অর্থ থাকতে পারে? এই স্লোগান বিজেপি তাদের রাজনৈতিক স্লোগান করেছে। বিজেপি কর্মীরা এ সব করে অহেতুক অশান্তির সৃষ্টি করছে।’
এদিকে, এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তিনি এদিন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। এটা বলা উচিত ছিল যে এটা ‘জয় শ্রী রাম’–এর জায়গা নয়, ‘জয় হিন্দ’ স্লোগানের জায়গা। যাঁরা করেছে তাঁদের ভৎসর্না করা উচিত ছিল তাঁর।’ কুণালের মতে, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে খারাপ লেগেছে তা বলা উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর বলা উচিত ছিল যে এটা ঠিক কাজ করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আসলে এটাকে প্রশ্রয় দিলেন। বানর সেনারা হাতের বাইরে চলে গেলে যা যা অসভ্যতা হওয়ার কথা তা–ই হয়েছে।’
একইসঙ্গে কুণাল ঘোষের দাবি, ‘বহিরাগত তকমাটা যে কতটা ঠিক তা আজ প্রতিষ্ঠিত করে দিল কয়েকজন অসভ্য, বেয়াদব। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দেওয়ার কথা নয়, সেটা এই বানর সেনারা জানে না। মুখ্যমন্ত্রী যখন বলতে উঠছেন তখন বলছে ‘জয় শ্রী রাম’, প্রধানমন্ত্রী বলতে গেলে বলছে ‘জয় শ্রী রাম’। নেতাজির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ‘জয় শ্রী রাম’ কালচার যায় না এটা এই অসভ্যগুলোকে বোঝাবে কে? এটা ‘জয় শ্রী রাম’ ভাল নাকি খারাপ সেই বিতর্কের কথা নয়, কিন্তু এই অনুষ্ঠান এমন ধর্মীয় স্লোগানের জায়গা নয়। এই সংস্কৃতিক চেতনা যাঁদের নেই তাঁদেরই বাংলায় বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।’